বিনা অপরাধে চোখ বেঁধে থানায় এনে আ.লীগ নেতাকে নির্যাতন!

বিনা অপরাধে জোর করে থানায় ধরে এনে চোখে গামছা বেঁধে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। মারাত্মক আহত ওই নেতা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিনা অপরাধে নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩১ জানুয়ারি রাতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানায়। নির্যাতিত নেতার নাম আজহারুল ইসলাম (৩০)। তিনি ঈশ্বরগঞ্জের মঘটুলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও মগটুলা ইউনিয়নের বৈরাটি গ্রামের কাছিম উদ্দিনের।

এদিকে, প্রাথমিক তদন্তে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি ও আওয়ামী লীগ কর্মীকে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আজহারুল ইসলাম পরিবার সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি রাতে আজাহারকে স্থানীয় মাইজবাগ বাজার থেকে ধরে নিয়ে আসে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই নূর কাশেম। পরে থানায় এনে ছেড়ে দেয়ার জন্য ঘুষ দাবি করেন নূর কাশেম। দাবি মতো ঘুষের টাকা দিতে না পারায় থানার ভিতরে চোখে গামছা বেঁধে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করেন ওই এসআই।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে রাত ২টার দিকে আজহারুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর থানার অপর কর্মকর্তা এএসআই মিজানের সহায়তায় তাকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৩৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। ওইদিনই আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন পাওয়ার পর অসুস্থ থাকায় ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশের কাছে বিচার দাবি করে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ স্থানীয় নেতারা থানায় গিয়ে আজহারুলের ওপর নির্যাতনের কারণ জানতে চান। এসময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান আহত ব্যক্তির চিকিৎসা ও পুলিশ নির্যাতনের কারণ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে আবারও আজাহারকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আজাহার বলেন, বিনা অপরাধে পুলিশ আমাকে ধরে এনে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। টাকা দিতে পারি নাই বলে আমাকে কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছে, টাকা দিতে পারলে রাতেই আমাকে ছেড়ে দিত। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে এসআই নূর কাশেম বলেন, মদ খেয়ে মাতলামি করার অভিযোগে গত ৩১ জানুয়ারি রাতে আজাহারকে স্থানীয় মাইজবাগ বাজার থেকে আটক করা হয়। তবে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ ও ঘুষ দাবি করার অভিযোগটি সঠিক নয়।

ওসি বদরুল আলম খান বলেন, মাদক ব্যবসায়ী সন্দেহে যুবককে আটক করা হয়েছিল। পরে সম্পৃক্ত না থাকায় তাকে ৩৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক তদন্তে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি ও থানার ভিতরে নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে। পুলিশ সুপারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই