বিমানে যাত্রীদের অদ্ভুত যত আবদার

বিমানে ভ্রমণকারীরা খুব কমই বিমানটির পরিচারক-পরিচারিকারা কী ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলা করেন সে সম্পর্কে ভাবেন। ফলে যাত্রীরা এমন সব আবদার করে বসেন যা সত্যিই খুব অদ্ভুত।

১. আমরা কি একসঙ্গে নাচতে পারি?
বিমান বালা হিদার পুল জানিয়েছেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এমন এক সেনা সদস্য একবার তার বিমানে চড়েছিলেন। তিনি তাকে তার সঙ্গে প্রথম শ্রেণির কামরার করিডোরে নাচার জন্য অনুরোধ করেন।”

উত্তরে হিদার পুল তাকে তার অনুরোধটি সুন্দর বলে প্রশংসা করে বিনয়ের সঙ্গে জানিয়ে দেন যে, তিনি বিমানের কোনো যাত্রীর সঙ্গিই নাচবেন না। হিদারপুল নিউইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার “ক্রুইজিং অ্যাটিটিউড: টেলস অফ ক্র্যাশপ্যাডস, ক্রু ড্রামা অ্যান্ড ক্রেজি প্যাসেঞ্জারস” এর লেখক।

২. মেয়েটিকে একটু…
ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট এবং ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট প্রেপ অ্যাকাডেমির মালিক লিয়া ভোল্প বলেন, “একবার আমি এক যাত্রীকে তার ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করি। তিনি আমাকে বলেন যে ৮সি নম্বরের আসনে একটি সুন্দরী মেয়ে বসে আছে।”

এরপর ওই যাত্রী ভোল্পকে একটি ন্যাপকিনে নিজের নাম ও ফোন নম্বর লিখে দেন মেয়েটিকে দেওয়ার জন্য। ভোল্পও তার কথা মতো কাজ করেন। এতে কাজও হয়। বিমান থামার পর ওই দু্ই পুরুষ ও নারী যাত্রী একসঙ্গে বিমান থেকে নামতে দেখা গেছে।

৩. ওভারহেড বিনে শিশু
বিমান বালা হিদার পুল বলেন, একবার এক যাত্রী তার বাচ্চাকে ওভারহেড বিনে পুরে রাখার চেষ্টা করেন।” এ ধরনের ভয়ানক অনুরোধের ঘটনা শুধু একবার নয় বেশ কয়েকবার ঘটেছে।
বিমান বালা লিয়া ভোল্প বলেন, একবার তাদের বিমানটি উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় তিনি ওভারহেড বিনে একটি বাচ্চার কান্না শুনতে পান।

এরপর তিনি নিজে গিয়ে বাচ্চাটিকে নামিয়ে আনেন। বাচ্চাটির মা তাকে দুটি লাগেজের মাঝখানে বসিয়ে রেখেছিলেন। শিশুটির মা বলেন, তিনি ওই ওভারহেড বিনটিকে বেসিনেট ভেবেছিলেন। আর তার নাকি ধারণা হয়েছিল, বিমানটি যতক্ষণ আকাশে থাকবে ততক্ষণই হয়তো বাচ্চাটিকে ওই বিনে রাখতে হবে।

৪. আমাকে আপনার জুতাগুলো মেইল করবেন, প্লিজ
হিদার পুল বলেন, “একবার এক যাত্রী আমার জুতাগুলো ঠিক করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন”। অথচ হিদার নিজে বুঝতে পারেননি তার জুতোগুলো ঠিক করা দরকার। ওই যাত্রী নিজেকে একজন মুচি বলে পরিচয় দেন। আর এ কারণেই হয়তো তিনি অন্য যাত্রীরা যা লক্ষ্য করেননি তা দেখে ফেলেছেন!

ওই যাত্রী পুলকে একটি বিজনেস কার্ড দিয়ে তাতে লেখা ঠিকানায় তার জুতোগুলো বক্সে ভরে মেইল করার জন্য অনুরোধ করেন! উল্লেখ্য, ইবেতে ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের ব্যবহৃত জুতো কেনা-বেচার বাজার আছে।

৫. আমার কি “মাইল হাই ক্লাবে” যোগ দিতে পারি?
লিয়া ভোল্প বলেন, “একবার আমাদের বিমানে এক নববিবাহিত দম্পতি ওঠেন। তারা পরস্পর থেকে এক মুহূর্তের জন্যও আলাদা হতে পারছিলেন না। সবার সামনেই তারা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরছিলেন। আমি যখন তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন তারা আমাকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করেন তারা “মাইল হাই ক্লাবে” যোগ দিতে পারেন কিনা! আর এজন্য তারা আমাকে তাদেরকে সহযোগিতা করারও অনুরোধ করেন!”

লিয়া জানান এরপর তিনি, পানীয়ের একটি গাড়ি এনে বিমানের সামনের একটি খালি জায়গায় তাদেরকে আড়াল তৈরি করে দেন; যেন তারা দুই জনই কথা বলতে পারেন। লিয়া তাদেরকে ১৫ মিনিট সময় দেন। এতে তারা বেজায় খুশি হন এবং লিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

৬. বাচ্চাদের খেলার জায়গা কোথায়?
হিদার পুল বলেন, “একবার এক যাত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করেন বাচ্চাদের খেলার জায়গা কোথায়? এতে আমি চারপাশে তাকিয়ে প্রথমে হাসি সংবরনের চেষ্টা করি। এরপর তাকে স্মরণ করিয়ে দেই যে তিনি বিমানে আছেন।”

তখন ওই যাত্রী বলেন, “যেহেতু দীর্ঘ সময় ধরে বিমানে বসে থাকতে হয় সেহেতু সেখানেও বাচ্চাদের খেলার জায়গা থাকা দরকার।”

৭. আমি কি অক্সিজেন মাস্কটি ব্যবহার করতে পারি?
লিয়া ভোল্প জানান, একবার এক বয়স্ক যাত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেন যতক্ষণ বিমানটি আকাশে থাকবে ততক্ষণই তিনি অক্সিজেন মাস্কটি মুখে লাগিয়ে রাখতে পারবেন কিনা। উত্তরে আমি তাকে বলি, “জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অক্সিজেন মাস্কের কোনো দরকার নেই।

আর আকাশে ওড়ার সময়টুকুতে সম্পূরক অক্সিজেন দরকার হবে। আসলে ওই ব্যক্তি সেবারই প্রথম বিমানে চড়েছেন এবং তার ধারণা ছিল আকাশে ওড়ার পুরো সময়টুকুতেই তাকে অক্সিজেন মাস্ক পরে থাকতে হবে।-ফক্স নিউজ ও কালের কন্ঠ



মন্তব্য চালু নেই