বিল বকেয়া থাকায় রাস্তা অন্ধকার করে বিদ্যুৎ বিভাগের বাহাদুরি

বিল বকেয়া থাকায় ঢাকা দক্ষিণ নগরীর আজিমপুর-পলাশী-নীলক্ষেত-কাঁটাবন এলাকায় সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানি ডিপিডিসি। বুধবার ঝড়বৃষ্টি আর সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎবিহীন সড়কে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। এতে পথে চলাচলকারী নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে নিরাপত্তাহীন এক ভয়ানক পরিস্থতি।

ডিপিডিসি জানিয়েছে, দুই কোটি টাকা বকেয়া বিলের জন্য বুধবার সকালের দিকে লালবাগ কমিউনিটি সেন্টার, আজিমপুর কমিউনিটি সেন্টার, আজিমপুর মিনি কমিউনিটি সেন্টার এবং কাঁটাবন থেকে নীলক্ষেত, নীলক্ষেত থেকে পলাশী, পলাশী থেকে আজিমপুর মোড়, আজিমপুর মোড় থেকে আজিমপুর কবরস্থান ও ইডেন কলেজ পর্যন্ত সড়ক বাতিগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমে আছে পানি আর সড়ক বাতিগুলোতে বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পর এসব এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পলাশীর মোড়ে কথা হয় শাহবাগ থেকে আজিমপুরগামী সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি রিকশায় করে বাসায় ফিরছেন। আজিজুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কে বিল দিল না দিল সেটা তো জনগণের দেখার বিষয় না। আমরা তো ট্যাক্স দেই। তাহলে কেন আলোহীন পথে চলাচল করবো। আামদের নিরাপত্তা দেবে কে?’

ইডেন কলেজের ছাত্রী আনিকা মৌ বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকরা কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি করে তার কোনো প্রতিকার নেই। জনগণের রাস্তার বাতি নিভিয়ে বাহাদুরি দেখানো হচ্ছে।’

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। এইমাত্র শুনলেন।’ তবে বিষয়টির দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির বিদ্যুতের দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাফর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে ডিপিডিসি বলছে, আজিমপুর এলাকার ১৮টি স্থাপনায় গত ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি ৯৮ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

ডিপিডিসির ’বিদ্যুৎ চুরি ও রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ সংক্রান্ত স্পেশাল টাস্কফোর্স’ প্রধান মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী জানান, ডিপিডিসি একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে। তাই বিল পরিশোধে সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। বকেয়া পরিশোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু পাওনা পরিশোধ না করায় বুধবার ভোর ৬টায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এর আগে চলতি মাসের ১০ তারিখ বকেয়ার কারণে ধানমণ্ডি ও সাতমসজিদ এলাকায় সড়ক বাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ডিপিডিসি। পরে ৪০ লাখ টাকা পরিশোধ করলে পুনঃসংযোগ দেয়া হয়। বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই