বিশেষ উচ্চতার দিকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পারমাণবিক চুক্তিকে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষণ বলে উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। রবিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২১ শতকের মূল কেন্দ্রে থাকবে শক্তি, যোগাযোগ ও নিরাপত্তা।

দুই দেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গে টেনে ভারতের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘রাজনৈতিকভাবে দুই দেশ সংযুক্ত, নিরাপত্তায় সংবেদনশীল এবং অর্থনৈতিক অংশীদার।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে করা এই চুক্তিতে তিনটি প্যাকেজের উল্লেখ রয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালাটানা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন লাইন উদ্বোধন করেছেন। এখন ভারত প্রস্তুতি নিচ্ছে সেটিকে ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার। ভারতের তেলসম্পদ মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র পাঠান সম্প্রতি ঢাকা সফর করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ডিজেল পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ভারত চায় বাংলাদেশে ওপর দিয়ে তার উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে এলপিজি ও এলএনজি গ্যাসসহ জ্বালানি পরিবহন করতে।

চারটি কোম্পান্-ি এইচইএল, রিলায়েন্স, সাপুরজি-পালনজি ও আদানি এরই মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে। রাশিয়া থেকে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আমদানির জন্য বাংলাদেশকে সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেবে ভারতের সঙ্গে এই আণবিক চুক্তি। এটি বাংলাদেশের জন্য যেমন বিশাল চুক্তি, তেমনি ভারতের জন্য অনন্য। এসব প্রকল্প চালু হলে এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম-আয়ের দেশে পরিণত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের জন্যই সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় হলো সম্প্রতি এদের স্থল ও সমুদ্রসীমা নতুন করে নির্ধারিত হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্করের ঢাকা সফরে আগে ৯ মে কার্যকর হয় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদ- পাওয়া জামায়াতের নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি। এই ইস্যুতে ভারত সব সময়ই বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।

১৯৬৫ সালের আগে ভারত-বাংলাদেশ যোগাযোগের যেসব রেললাইন ছিল, সেগুলো নতুন করে চালু করতে উদ্যোগী। এর মধ্যে রয়েছে আখাউড়া-আগরতলা, খুলনা-দর্শনা ও পার্বতীপুর-কাউনিয়া। এসব রেললাইন পাকিস্তান বন্ধ করে দিয়েছিল। এ ছাড়া আগামী বছর ফেনী নদীর ওপর সেতু হচ্ছে।

তবে বাংলাদেশের নজর পানি চুক্তির দিকে, বিশেষ করে তিস্তা ও ফেনী নদীর চুক্তি বাস্তবায়ন। ভারতও এ ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন বিকাশমান এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশই পরস্পরকে কিছু ছাড় দেয়ার ইচ্ছা রাখে।



মন্তব্য চালু নেই