বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষার্থী কেউই ভ্যাট দিবে না

‘শিক্ষার্থীরা নয় ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয়’- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে নেয়া এমন সিদ্ধান্তকে সরকারের আরেকটা ফাঁকি বলে মন্তব্য করে বিএনপির পক্ষে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রছাত্রী কেউই ভ্যাট দিবে না।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, সরকার শিক্ষাকে বাণিজ্যকরণ করতে যেয়ে শিক্ষাকে পণ্য বানিয়ে ছেড়েছে এবং ৭% ভ্যাট বহাল রেখেছে। এর প্রতিবাদে নানা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকবৃন্দ প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকদের প্রতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হামলায় দলের পক্ষে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রিপন।

মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত বেতন স্কেলে বিএনপির সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বাজারের বাস্তবতায় সরকারী চাকরিজীবিদের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের দল-বিএনপি সমর্থন করে। সরকারী কর্মচারীদের স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য বাজার উপযোগী বেতন-ভাতার নিশ্চয়তা থাকা উচিৎ-তাতে মেধাবীদের সরকারী চাকরির প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।

কিন্তু মাত্র ২১ লাখ সরকারী চাকরিজীবিদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির অনুমোদনের পর বাজারে দ্রব্যমূল্য বাড়াবে, ঘরভাড়া বাড়বে, বাসভাড়া-রিকশা ভাড়া সহ সবকিছুরই ব্যয় বাড়বে-অথচ এ বৃদ্ধির কোন যুক্তি নেই বলে জানান এই বিএনপি নেতা।

কিন্তু ৮ম জাতীয় পে-স্কেলে সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয় বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উত্থাপিত দাবী-দাওয়ার কোন প্রতিফলন ঘটেনি বলে অভিযোগ করে বিএনপি। দলের পক্ষে রিপন বলেন, বাংলাদেশের সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুণ হয়েছে সরকারের অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন কিন্তু ১৯৭২ সালের তুলনায় প্রকৃত আয় হয়ে গেছে তিন ভাগের এক ভাগ।

দেশে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সম্মানজনক না হওয়ায় প্রকৃত মেধাবীরা শিক্ষকতার পেশায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটি বলছে, বিএনপি বেতনভাতা ও মর্যাদার প্রশ্নে শিক্ষকদের দাবিগুলোর সাথে সহমত পোষণ করে। একই সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের বেতন-ভাতা মর্যাদার দাবি দাওয়া তোলায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিক্ষকদের প্রতি শিষ্টাচার বহির্ভূত যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ৎ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের প্রকৃত মর্যাদায় উপনীত করা হবে উল্লেখ করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, শিক্ষকদের যাতে কর্ম বিরতি পালন করতে না হয়, ক্লাশ-পরীক্ষা গ্রহণে অস¡ীকৃতি জানাতে না হয় সেজন্য সরকার শিক্ষকদের দাবি মেনে নেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন যেন সংকটে নিপতিত না হয় সে বিষয়টি সরকারকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সরকারের শিক্ষা সংকোচন নীতি ও বানিজ্যিকিকরণের নীতি মুক্তিযুদ্ধ চেতনারও পরিপন্থী বলে মনে করে বিএনপি।



মন্তব্য চালু নেই