বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহসী বাংলাদেশ পুলিশ : জাতিসংঘ

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আবারো বাংলাদেশ পুলিশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার সংস্থাটির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল পিটার ড্রেন্নান বলেছেন, পৃথিবীর যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতা অত্যন্ত উঁচুমানের। বাংলাদেশ অনেক দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি আনয়নে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এবং অনবদ্য অবদান রাখছে।

এদিন পিটার ড্রেন্নান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন আইভরিকোস্ট পরিদর্শনরত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হকের সঙ্গে সাক্ষাতকালে ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (পুলিশ সদর দফতর) মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি জানান, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইভরিকোস্ট মিশনে কর্মরত ফরমড পুলিশ ইউনিট (FPU- Formed Police Unit) এর সংখ্যা ৭টি থেকে কমিয়ে ৩টি করা হচ্ছে। ৩টি FPU এর মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ অন্যতম। উন্নত নৈতিকতা, কঠোর শৃঙ্খলাবোধ এবং পেশাদারিত্বের কারণে আইভরিকোস্ট মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও দক্ষতার কারণে এ অনন্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

এসময় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশে সর্বোচ্চ একক অবদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বশান্তি রক্ষায় তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমাণে সমর্থ হয়েছে। তিনি জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতনপদে বাংলাদেশ থেকে পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে অনুরোধ জানান।

জাতিসংঘ বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শককে বিশেষ বিমানে করে রাজধানী আবিদজান থেকে মিশন এলাকা কারগোতে নেওয়া হয়েছে। তিনি মিশন এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় পুলিশ কমিশনার নিশিমিয়িমানা ভিয়ান্নি, জাতিসংঘের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন মিশনের পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং গণ্যমান্য বক্তিবর্গ তাঁকে স্বাগত জানান। স্থানীয় পুলিশ কমিশনার আইজিপিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

আইজিপি আইভরিকোস্ট হতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মালি পরিদর্শনে যান। তিনি মালিতে জাতিসংঘের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

মালির পুলিশ কমিশনার জাতিসংঘের ম্যান্ডেন্ট বাস্তবায়নের সাথে সাথে মালিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং তাদের জনগণকে সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের পুলিশ প্রধানের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। তিনি মালির পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদানের জন্য আইজিপির প্রতি অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান মালির শান্তিরক্ষায় সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি মালির পুলিশের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।

আইজিপি মালি মিশনে পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, একটি পূর্ণাঙ্গ মহিলা কন্টিনজেন্ট স্থাপন এবং জাতিসংঘ পুলিশ সদস্য নিয়োগ করার জন্য ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের প্রতি অনুরোধ জানান।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক মালিতে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে কর্মরত সেনা সদস্যরা আইজিপির সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেন। নৈশভোজে জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ, সেদেশের পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং বিশিষ্ট বক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, আইজিপি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন আইভরিকোস্ট ও মালি পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার আইভরিকোস্টের রাজধানী আবিদজানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।



মন্তব্য চালু নেই