‘বিশ্বায়নের যুগে হারিয়ে যাচ্ছে লোকজ সংস্কৃতি’

ইয়াজিম ইসলাম পলাশ, রাবি প্রতিনিধি : বর্তমান বাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়নের যুগে লোকজ সংস্কৃতি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। এখন সময় এসেছে লোকজ সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার করার। কারণ নিজেদেরকে ফিরে পেতে হলে আমাদেরকে বারবার লোকজ সংস্কৃতির কাছেই ফিরে আসতে হয়।

শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও অ্যালামনাই পুর্নমিলনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বেসরকারি বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিদেশিরা এসে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করছে, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের ফোকলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও এগিয়ে আসতে হবে। লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে নতুন নতুন গবেষণায় শিক্ষার্থীদের যুক্ত করতে হবে। যাতে করে তারা বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়।

রাশেদ খান মেনন বলেন, পর্যটন এখন আর কেবলমাত্র বিনোদন বা ছুটির দিনে বেড়িয়ে আসা নয়, এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বহুমাত্রিকতা। সেই বহুমাত্রিকতায় আমরা দেখছি সাংস্কৃতিক পর্যটন, ধর্মীয় পর্যটন, ফুড ফেস্টিভালস, কমিউনিটি ট্যুরিজম এবং একই সঙ্গে ইকো ট্যুরিজম। এই ইকো ট্যুরিজমের সঙ্গে লোকজ সংস্কৃতির যোগসূত্র রয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে দুইদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাজশাহীর নর্থবেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল খালেক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বলেন, ফোকলোর প্রবাহমান একটি বিষয়। এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়। আর এর মধ্য দিয়েই লোকজ সংস্কৃতি বিকশিত হয়। নগর সংস্কৃতি লোকজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। সান্ধ্য আইন দিয়ে সেই উৎসব নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। বৈশাখী উৎসব কীভাবে হবে তা যখন ওলামা লীগ ঠিক করে দেয় সেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

অনুষ্ঠানে উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াসমীন আরা লেখা বলেন, লোকজ সংস্কৃতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ফোকলোর বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ বাংলার লোক সংস্কৃতির ঐতিহ্য লুকিয়ে থাকে ফোকলোরের মধ্যেই। এসময় তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে ফোকলোর বিভাগ চালুর আশ্বস দেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমিরেটাস বরুণ কুমার চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্য দেন ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোর্বারা সিদ্দিকা। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা, জাপানের মানবতাবাদী লেখক ও লালন গবেষক নাওমী ওয়াতানাবে। অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই