বিশ্বের ‘সবচে সুন্দরী’ নারী, তবুও আক্ষেপ

২৬ বছরের টগবগে সুন্দরী কোন তরুণী আর যাই করুক না কেন, কোনভাবেই গৃহবন্দি হয়ে থাকবে না। বিশেষ করে যার পেশা হচ্ছে মডেলিং করা। কিন্তু তাজ্জব বিষয় হচ্ছে, এই তরুণী সারাদিন ঘরবন্দি থাকেন। বাড়ির বাইরে কখনও কোথাও একা একা যান না। মডেলিংয়ের সময় সাথে থাকে তার মা।

এমনকি কোনও ছেলেবন্ধু যদি তাকে সাথে নিয়ে ডেটিংয়ে যেতে চান, সেখানেও বডিগার্ডের মত থাকেন মা। ঘটনা এখানেই শেষ না। এই মেয়ে কোন জামা পরবেন আর কোনটা পরবেন না, সেটা নির্ভর করে মায়ের উপর। তার মায়ের ধারণা মেয়েকে হাত ছাড়া করলে চিরকালের মত হারিয়ে যাবে, থাবা দিয়ে ছিনিয়ে নেবে কোন পুরুষ। ২৬ বছরের এই তরুণী এখনো মায়ের হাতের পুতুল।

2016_05_25_22_00_52_q9Xuf5OTgV1dlzL7yYre1f1zyGdAoG_original

রুশ এই তরুণীর নাম অ্যাঞ্জেলিকা কিনোভা। ছোটবেলা থেকেই তিনি ডানাকাটা পরী। তার বাবা-মা মেয়েকে সাজিয়ে-গুছিয়ে রেখেছেন ঠিক পুতুলের মতো। সেই পুতুল পুতুল ছাপ তরুণী হয়ে ওঠার পরও তার চেহারা থেকে যায়নি। বরং আরও বেড়েছে।

মার্কিন একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানি ১৯৫৯ সালে বাজারে আনে বার্বি নামের একটি পুতুল। পরবর্তীতে বিখ্যাত হয় পুতুলটি।অ্যাঞ্জেলিকাকে একনজর দেখলে যে কেউ তাকে বার্বি ডল ভেবে ভুল করবে। কারণ ছোট্টবেলা থেকে মেয়েকে ঠিক বার্বি সাজিয়েই রাখতেন তার বাবা-মা। অনেকেই তাকে দেখে বলতেন ‘হিউম্যান বার্বি’।

2016_05_25_22_00_16_4wjDvEWdsf5162ksxLZOEYtoEBrE1R_original

অ্যাঞ্জেলিকার গোটা জীবনটাই আসলে তার রূপ যৌবন কেন্দ্রিক। রূপ নিয়ে তার চেয়ে তার বাবা-মা বেশি মাথা ঘামিয়েছে। মেয়ে শুধু সুন্দরী পুতুল হলে চলবে না, তার শারীরিক সৌন্দর্য হতে হবে নজরকাড়া!

কাজেই মেয়েকে আরও বেশি আবেদনময়ী করতে বাড়িতে ট্রেনার রেখে শরীর ও রূপচর্চারও ব্যবস্থা করলেন তারা। এতো পরিশ্রম বৃথা যায়নি।এই তরুণীর শরীরের মাপ দাঁড়িয়েছে ৩৪-২০-৩৪। ওজন ৩৮ কেজি। মডেলিং করেন। খ্যাতি, সৌন্দর্য- সবই হয়েছে। তবু নাকি আক্ষেপের শেষ নেই এই হিউম্যান বার্বির।

কিন্তু কি এমন আক্ষেপ হতে পারে এই অপ্সরীর? তাকে সবকিছু ঢেলে দেয়ার লোকের তো অভাব হওয়ার কথা না। কি চায় এই মেয়ে? দামী গাড়ি, অট্টালিকা? নাকি কাড়ি কাড়ি টাকা? কিন্তু না, এসব কিছুই চায় না এই পুতুল রমণী। তার আক্ষেপ অন্য জায়গায়। অ্যাঞ্জেলিকা স্বাধীনতা চায়।

2016_05_25_22_01_32_33EuIX3SPEOkPXkF0fHsuo4FdMciCX_original

অ্যাঞ্জেলিকা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি বড় হয়েছি। কিন্তু স্বাধীন হই নি। আমি স্বাধীন হতে চাই। আমি এখনো আমার বাবা-মার কথায় উঠি-বসি। তারা চান না আমি বাড়ির বাইরে যাই। মা সঙ্গে না থাকলে আমার জামাকাপড় কেনার অধিকার পর্যন্ত নেই। আমাকে কোন পোশাকে ভালো দেখাবে, সেটাও ঠিক করে দেন মা। আর কোনও বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ডেটে গেলে, মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী আমাকে তিনজনের জন্য টেবিল বুক করতে হয়। কারণ মা-ও আমার সঙ্গে যান। সেজন্যই কেউ আমার বয়ফ্রেন্ড হতে চান না। সবাই তার বন্ধু।’

2016_05_25_22_02_50_6nRGBthIJNLdnHy1fUqbCiQSKl1Rcm_original

অ্যাঞ্জেলিকার স্বাধীনতা চাওয়ার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, তিনি এখন শুধু বন্ধু চান না, তিনি অপেক্ষা করছেন একজন প্রকৃত প্রেমিকের।তবে কোনও আলুভাতে পুরুষ হলে তার চলবে না। তার চাই এমন একজন পুরুষ যার চোখেমুখে থাকবে শক্তি আর অহঙ্কারের ছাপ। এই রুশ যুবতীকে হয়তো আর বেশিদিন প্রাসাদে আটকে রাখতে পারবেন না বাবা-মা। তার পাখা গজিয়েছে। খুব শিগগিরই তিনি উড়াল দেবেন। সব মানুষই স্বাধীনতা চায়, স্বাধীনতার অর্থ সে বুঝুক আর না বুঝুক।



মন্তব্য চালু নেই