বিশ্বের সবথেকে ‘সুখী’ এই দেশ, কিন্তু এই ‘সুখ’ এর উৎস কী?

ভুটানি সংস্কৃতিতে দীর্ঘ কাল ধরেই বিষয়টা রয়েছে। আর সেটা এমনভাবেই সেদেশের মানুষের জিন-মানচিত্রে প্রোথিত হয়ে রয়েছে যে, তাদের ‘সুখী’ না হয়ে কোনও উপায় নেই। ভুটানকে বিশ্বের সবথেকে সুখী দেশ বলে ডাকা হয়, একথা অনেকেই জানেন। কিন্তু এই ‘সুখ’-এর পিছনে রয়েছে এক অদ্ভুত মনস্তাত্ত্বিক অভ্যাস। ভুটানি সংস্কৃতিতে দীর্ঘ কাল ধরেই বিষয়টা রয়েছে। আর সেটা এমনভাবেই সেদেশের মানুষের জিন-মানচিত্রে প্রোথিত হয়ে রয়েছে যে, তাদের ‘সুখী’ না হয়ে কোনও উপায় নেই।

দীর্ঘস্থায়ী মানসিক শান্তি বজায় রাখার জন্য ভুটানের বাসিন্দারা প্রতিদিন বেশ কয়েকবার মৃত্যুচিন্তা করেন। সাধারণত দিনে ৫ বার এই মৃত্যুচিন্তা করার নিদান তাঁদের সংস্কৃতিতে রয়েছে। কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তাত্ত্ববিদ ন্যাথান ডিওয়াল এবং রয় বাউমিস্টার এই মৃত্যুচিন্তা নিয়ে এক বিস্তারিত গবেষণায় দেখিয়েছেন, মৃত্যু মনের কাছে একটা হুমকি-বিশেষ। কিন্তু মানুষ যখন মৃত্যুচিন্তা করে, তখন মনের অবচেতন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সুখের কথা ভাবতে শুরু করে।

গবেষকদের মতে, ভুটানের মানুষ দু’টি কারণে মৃত্যুকে ভয় পান না। প্রথমত, তাঁরা জানেন, মৃত্যু যে কোনও মুহূর্তে যে কোনও উপায়ে আসতে পারে। ভুটানের ভূপ্রকৃতি, তার বিপজ্জনক পথ-ঘাট, সেদেশের বিপজ্জনক খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যুকে ডাকা আনতে পারে। দ্বিতীয়ত, ভুটানের বাসিন্দারা বৌদ্ধ। তাঁরা পুনর্জন্মে বিশ্বাসী। মৃত্যুকে তাঁরা একটা সাময়িক ঘটনা বলেই মনে করেন। ‘সুখ’ নামক এক সদাপলায়মান শুকপাখির প্রতি ভুটানের সংস্কৃতির এই অস্বাভাবিক গুরুত্ব আরোপ সে দেশকে ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস ইনডেক্স’-এর বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে। ১৯৭০ দশক থেকে ভুটান বিশ্বাস করতে শুরু করে, পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিই প্রগতির একমাত্র উপায় নয়। তার পর থেকেই শুরু হয় ‘সুখ’-এর প্রতি তাদের এই গুরুত্ব আরোপ।-এবেলা



মন্তব্য চালু নেই