বিড়ালটিকে মেরে ফেলার পর খুব খারাপ লাগছে, এ সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

একটি বিড়াল আমার মাকে কামড় দিয়েছিল। তাই বিড়াল দেখলেই লাঠি দিয়ে ভয় দেখাই। আজ একটি বিড়ালকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতেই মারা যায়। আমার খুবই কষ্ট লাগছে। আমার প্রশ্ন হলো আমি কি পাপ করলাম? এ সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, পশু-পাখি ও জীব-জন্তু আল্লাহতায়ালার অনন্য দান ও নিয়ামত। আল্লাহতায়ালা মানুষের উপকার ও সুবিধার জন্য এসব সৃষ্টি করেছেন। তাই এসবের কোনো ক্ষতি করা চলবে না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আমি আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ -সূরা বনি ইসরাইল: ৭০

ইসলাম জীব-জন্তু সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। অযথা কোনো পশুকে হত্যা বা উচ্ছেদ করতে নিষেধ করেছে। নবী করিম (সা.) জীব-জানোয়ারকে লক্ষ্য বানিয়ে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। হাদিসে আছে, একদা ইবনে ওমর (রা.) কোরাইশের কিছু যুবকের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, যুবকেরা পাখি ও মুরগিকে তাক করে (তীর নিক্ষেপ করে) লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করার বিষয়ে প্রতিযোগিতা করছে। যখন তারা ইবনে ওমরকে দেখল, দৌড়ে পালাল। তখন ইবনে ওমর তাদের লক্ষ্য করে বললেন: ‘আল্লাহর রাসূল (সা.) যারা প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানায় তাদের অভিশাপ করেছেন।’ –সহিহ মুসলিম

অকারণে কোন প্রাণী হত্যা বা গাছপালা বিনষ্ট করা ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে মানুষের অপকার বা ক্ষতি সাধন করে এমন প্রাণী, গাছপালা নিধনে কোন বাধা নেই।

বিড়ালটিকে হত্যা করা ঠিক হয়নি। এখন এ জন্য আল্লাহ মহানে কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং ভাবিষ্যতে এমন আর না করার দৃঢ প্রতিষ্ঠা করা উচিত। সাথে সাথে আল্লাহর রাস্তায় কিছু দান সাদাকাহ করে দিলে ভালো হয়।

পরামর্শ দিয়েছেন :
মাওলানা মিরাজ রহমান
ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক।



মন্তব্য চালু নেই