বিয়ের বয়স শিথিলের উদ্যোগে এইচআরডব্লিউর আহ্বান

বিশেষ ক্ষেত্রে মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা শিথিলের সুযোগ রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন’ পাস না করতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির নারী অধিকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ গবেষক হিদার বার শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া খসড়া আইনটি পাস হলে মেয়েদের আরও বেশি বাল্যবিয়ের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে ওই বিল বাতিল করা সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব।

গত মাসে মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ এবং ছেলেদের সর্বনিম্ন বয়স ২১ রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে এবং বাবা-মায়ের সমর্থনে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে এই আইনে।

হিদার বার দাবি করেছেন, বিশ্বে বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ এবং এশিয়ার ভেতরে এটি সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে ১৮ বছরের আগেই ৫২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। আর ১৫ বছর হওয়ার আগে বিয়ে হয় ১৮ শতাংশ কিশোরীর। বাল্যবিয়ের কারণে অনেক বিবাহিত কিশোরী ও তাদের পরিবারের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অকালে গর্ভধারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে এসব কিশোরী।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই গবেষক বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ২০১৪ সালে বাল্যবিবাহ বন্ধে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সীদের বিয়ে বন্ধ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিয়ে বন্ধে কঠোর বিধি রেখে আইন সংস্কারের কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো কর্ম পরিকল্পনা হয়নি। বরং খসড়া আইনে যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে তাও অপ্রতুল।

এ আইনকে বড় ধরনের পশ্চাদপদতা উল্লেখ করে হিদার বলেন, দুর্বল আইন বাল্যবিয়ে বন্ধের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। এটি সারা দেশের অভিভাবকদের এই বার্তা দেবে যে, সরকার ভাবছে কিছু ক্ষেত্রে বাল্যবিয়ে অনুমোদনযোগ্য।



মন্তব্য চালু নেই