বিয়ে ভাঙার আজব যত কারণ জেনে নিন

কয়েক বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের উচ্চবর্ণ ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের এক নারী গর্ব করে বলেছিলেন, তার কুকুরের জন্যও কনে খুঁজে পেতে কোনো সমস্যা হবে না। আর তার বেকার ছেলের জন্য কনে পাওয়া তো কোনো ব্যাপারই না। তার এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, প্রদেশটিতে কতটা নিম্ন মর্যাদা ভোগ করে নারীরা। নারী উন্নয়নে জতিসংঘ নির্ধারিত সূচক থেকে অনেক দূরে অবস্থান উত্তর প্রদেশের। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়।

কাকে বিয়ে করতে হবে, কখন বিয়ে করতে হবে- এসব বিষয়ে মেয়েদের বলার প্রায় কিছুই থাকে না। এখানকার লাখো মেয়ের বিয়ে হয় বাল্য বয়সে। তবে রাজ্যটিতে পরিবর্তিত হতে শুরু করেছে এ প্রথা। সাম্প্রতিক বেশ কিছু বিয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নানা কারণে অনেক মেয়েই পরিবার থেকে চাপিয়ে দেয়া বিয়ে মেনে নেয়নি। অযোগ্য আর অপছন্দের পাত্রকে বর্জন করেছে তারা। এর মধ্যে আছে কিছু অদ্ভূত কারণও। এমনই কয়েকটি তুলে ধরা হলো এখানে:

মদপান করায় বিয়েতে ‘না’

গত মাসে ভারতের ফিরোজাবাদ জেলার এক মেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানেই তার বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মদ্যপ অবস্থায় বিয়ের অনুষ্ঠানে আসায় তার সাথে বিয়েতে রাজি হয়নি মেয়েটি। বিয়ে ভাঙ্গার কারণ হিসেবে কনে জানায়, ‘লোকটি ছিল মদ্যপ। যখন সে জয়মাল্য পর্বে মালাবদল করতে যাচ্ছিল তখন সে দাঁড়াতে পারছিল না। তাই আমি বিয়ে বন্ধ করতে আমার পরিবারকে বলেছি।’

ভুল অঙ্কে ভেঙেছে বিয়ে

গণিত না পারায় বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। দিকে লাভলী নামের এক তরুণী তার বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। তার ভাষায়, ‘যখন আমার বাবা বিয়ের বিষয়ে পাকা সিদ্ধান্ত নেয় তখনো আমি জানতাম না যে আমার বর অশিক্ষিত। কিন্তু আমি বিয়ের পূর্বেই সিদ্ধান্ত নেই তাকে যাচাই করে দেখার। আমি তাকে একটা সাধারণ গণিত করতে বলি, যা সে করতে পারিনি।’ লাভলি জানায়, সে তার হবু বরকে ১৫ আর ৬ যোগ করতে বলেছিল। যোগফল হিসেবে বর লেখে ১৭।

অসুস্থ বর তাই কনের বিয়ে বর্জন

সম্প্রতি অসুস্থতার কারণে এক বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কারণ হিসেবে জানা যায়, ওই বর বিয়ের অন্যতম আকর্ষণ জয়মাল্য পর্বে কনের মালা কেড়ে নেয় এবং বিয়ের অতিথিদের সামনে ছিড়ে ফেলে। এ সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সাথে সাথে তাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরিবারে পক্ষ থেকে বলা হয় সে আসলে মৃগীরোগী। বিয়ের আগে তার পরিবার তা গোপন করে রেখেছিল। সুস্থ হওয়ার পর বরের পরিবার থেকে কনেকে বিয়ের অনুরোধ জানালে কনে তা প্রত্যাখ্যান করে।

চুমুতে ভেঙেছে বিয়ে

একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আলিগড়ের এক যুগল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং নগরপিতা। কিন্তু এর মধ্যেই ঘটলো বিপত্তি। বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে অতিরিক্ত আবেগী হয়ে পড়েছিল বরের ভাবি। সবার সামনেই দেবরকে সে একটি চুমু খেয়ে ফেলে। আর এতে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বসে কনে।

আলোকসজ্জা নিয়ে বিবাদ

গত বছর ভারতের কানপুর শহরে এমনই আরো এক অদ্ভূত কারণে একটি বিয়ে ভাঙ্গার খবর পাওয়া যায়। বরের পরিবারের দাবি ছিল, বিয়ের অনুষ্ঠানে জাকজমকপূর্ণ আলোকসজ্জা করতে হবে। কিন্তু কনের পরিবার তাতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে কনের পরিবারকে অসামাজিক এবং অসভ্য বলে গালি দেয় বরের পরিবার। তবে এতে বিয়ে ভেঙেছে কি না- তা এখনো জানা জায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ে ভাঙ্গার কোন খবর তাদের জানা নেই। তবে আলোকসজ্জা নিয়ে বাকবিতণ্ডা সম্পর্কে তারা জেনেছেন।

ধূমপান না ছাড়লে বিয়ে করব না

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ- এটা সবাই জানে। ধূমপায়ীকে ধূমপান ছাড়ার পরামর্শও দেয় অনেকে। তবে এর জন্য বিয়ে ভাঙার খবর কোথাও পাওয়া যায় না। তবে এবার বিয়ে করতে ধূমপানই হয়েছে কুফল। ধূমপান করে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসায় বরকে প্রত্যাখ্যান করে কনে। সে তার পরিবারকে বিয়ে বন্ধ রাখতে অনুরোধ করে।



মন্তব্য চালু নেই