বীরগঞ্জে ১১টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী’র ছড়াছড়ি

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ছড়াছড়ি হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী’র । দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে ১১টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী আওয়ামী লীগের ১১ জন এবং বিএনপির একজন প্রার্থী ব্যাপক গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

এরই মধ্যে নিজপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। বীরগঞ্জে দলীয় কোন্দলের কারণে বিদ্রোহী প্রার্থীরাই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে ভোটাররা মত প্রকাশ করেন।

নিজপাড়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল খালেক সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানির জন্য নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মরিচা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আতাহারুল ইসলাম হেলাল চৌধুরী জানান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা সাধারণ ভোটারদের বিভ্রান্ত করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছে। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টাও করছে।

জানা গেছে, শিবরামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. হামিদুল হক। সেখানে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জনক চন্দ্র অধিকারী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে।

পলাশবাড়ী ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ মানিক। সেখানে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. পরেশ চন্দ্র বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে।

শতগ্রাম ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মো. গোলাম মোস্তফা। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. হুরমত আলী।

পাল্টাপুর ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুরেন্দ্র রায় কোকিল।

সুজালপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী মহেশ চন্দ্র রায় নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নিজপাড়া ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরিয়াস সাঈদ মো. ফয়সাল। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আব্দুল খালেক সরকার। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ওয়াহেদুজ্জামান বাদশা। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল দেব শর্মা। তিনি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোগনগর ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. রাজিউর রহমান রাজু। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

সাতোর ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম শেখ। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রবীন্দ্রনাথ গোবিন বর্মন। তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ নেতা পদ্ম নাথ রায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোহনপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রভাষক মো. জিয়াউর রহমান জিয়া নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মরিচা ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অজিবুল ইসলাম।এছাড়া এ ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদের মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিদ্রোহীদের বিষয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকারিয়া জাকা জানান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা সভানেত্রী শেখ হাসিনার আদেশ অমান্য করার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরাসরি তৃণমূলের গোপন ভোটে প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনীত করা হয়। পরে কেন্দ্রে সেই প্রার্থীদের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী।



মন্তব্য চালু নেই