ব্যথানাশক ওষুধ অঙ্গ বিকল করে !

আমরা সবাই কোনো না কোনো ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকি। সাময়িকভাবে ব্যথানাশক ওষুধ শরীরের জন্য তেমন ক্ষতিকর না হলেও দীর্ঘদিন খেলে তা মারাত্বক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে চলেছে। এছাড়াও যারা বিভিন্ন আর্থ্রাইটিস বা বাত রোগে কিংবা ডিজেনারেটিভ ডিজিজ বা বয়সজনিত হাড়ের ক্ষয় রোগ যেমন-রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এনকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস, অষ্টিওআর্থ্রাইটিস, স্পনডাইলোসিস ইত্যাদি রোগে ভুগছেন। তাদেরকে নিয়মিতই কোনো না কোনো ব্যথানাশক ওষুধ খেতে হয়।

তবে দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ওষুধ খেলে আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গ যেমন- কিডনী, লিভার, পাকস্থলী ইত্যাদির মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি তা বিকলও হয়ে যেতে পারে। এমন হলে রোগীদের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে; যেমন- তীব্র পেটে ব্যথা, পায়খানার সাথে রক্ত আসা, রক্তবমি হওয়া, রোগীর পা ও মুখ ফুলে যাওয়া, চোখের নিচে পানি জমা, প্রসাব কম হওয়া বা প্রসাব বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

একাধিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যথানাশক ওষুধ বা এন এস আই ডি জনিত আলসার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যা এখনই প্রতিরোধ না করলে মহামারী আকার ধারণ করতে পারে।

তাই যারা বিভিন্ন রকম ব্যথা-বেদনা বা আর্থ্রাইটিস বা বাত রোগে ভুগছেন; যেমন- হাটু, ঘাড়, কোমর ও কাধে ব্যথায় আক্রান্ত, তারা ব্যথানাশক ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া বিহীন আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম শাখা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা মুক্ত জীবনযাপন করতে পারেন।

এখানে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষন ও রোগ নির্ণয় করে, সেই অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নির্ধারণ করে থাকেন যার মধ্যে – হাইড্রোথেরাপি, ম্যনুয়াল থেরাপি, ইলেকট্রোথেরাপি ও থেরাপিউটিক ব্যায়াম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

এই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর ব্যথা কমে আসে, জয়েন্ট বা অস্থি-সন্ধির নড়াচড়া সহজ হয়, মাংসপেশীর কার্যক্ষমতা বাড়ে ও রোগী স্বাভাবিক চলাচল করতে পারে।

অতএব ব্যথার ওষুধ পরিহার করে পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়াহীন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে ব্যথার ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।



মন্তব্য চালু নেই