ব্যান্ডউইথের দাম কমলো, সুবিধা পাবে মোবাইল গ্রাহকেরা

ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম কমল। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড আজ মঙ্গলবার থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে। ইন্টারনেট গেটওয়েগুলো এখন ১ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাবে ৬২৫ টাকায়। যা আগে ছিল এক হাজার ৬৮ টাকা। তবে এই মূল্য কেবল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে কার্যকর হবে।

যেসব অপারেটর ন্যূনতম ১০ গিগাবিট ব্যান্ডউইথ ক্রয় করবে শুধু তারাই ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের এই মূল্য সুবিধা উপভোগ করতে পারবে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে মাত্র ২/৩টি মোবাইল অপারেটরই এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে থাকে। তারা ব্যতীত অন্য কোনো ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে না। মোবাইল অপারেটররা যেহেতু এই কমমূল্যে ব্যান্ডউইথ পাবে, তাই শুধু মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরাই কম মূল্যের ইন্টারনেট সুবিধা উপভোগ করতে পারবে।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার থেকেই এই মূল্য কার্যকর হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত ব্যান্ডউইথের পাইকারি বিক্রেতা। আমাদের কাছ থেকে আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যান্ডউইথ কিনবে। তারপর তারা বিভিন্ন আইএসপি বা মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিক্রি করবে। বর্তমানে ২৬টি আইআইজি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১০ গিগাবিট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে এমন আইআইজির সংখ্যা ১০ থেকে ১২টি।’

মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই সরকার এবং রেগুলেটর প্রত্যেকটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করে দিক। আমরা বলেছি, প্রান্তিক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথকে ছয় জনের মধ্যে শেয়ারড লাইন হিসেবে প্রদান করা হোক। তাহলেই প্রান্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারীরাও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে।’

এ বিষয়ে আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ‘আমরা সরকারের এই ব্যান্ডউইথ দাম কমানোকে স্বাগত জানাই। যেসব কোম্পানি সরকারকে ৭২ লক্ষ টাকা মাসিক বিল এবং ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিতে পারবে তারাই প্রতি মেগাবিট ৬২৫ টাকা হিসেবে ব্যান্ডউইথ কেনার সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। আমরা যারা ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছি তাদের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইএসপিও ২ থেকে ৩ গিগাবিটের বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে না। বাংলাদেশে সর্বমোট ইন্টারনেট চাহিদা ১২০ গিগাবিইট। যার মধ্যে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ৩০ গিগাবিইট ব্যবহূত হয়। আমরা চাই সবাই যেন এই ন্যূনতম মূল্যের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের সেবা গ্রহণ করতে পারে—এমন সুযোগ সৃষ্টি করা হোক।’

দেশের অন্যতম ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মেট্রোনেটের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, ‘দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৭ শতাংশই মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। তাই এই মূল্য কমার ফলে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা যেন সুবিধা পায় সে আশাই করব। এই মূল্য কমার ফলে আইএসপিগুলো তেমন মূল্য কমাতে পারবে না। ব্যান্ডউইথের দাম ইন্টারনেট সেবার মাত্র পাঁচ শতাংশ। তাই ব্যান্ডউইথের দাম কমালেও তা ভোক্তা পর্যায়ে মোট খরচে খুব বেশি প্রভাবে ফেলে না। কারণ ব্যান্ডউইথ কেনার পর গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছাতে যে খরচ হয় তাতে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা এই সার্ভিস গ্রাহকদেরকে কম মূল্যে দিতে পারে না। সে কারণেই ক্রেতা পর্যায়ে দাম কমানো সম্ভব হয় না।’



মন্তব্য চালু নেই