ব্রাজিলের গম বিতরণে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম বিতরণে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

সূত্রে জানা যায়, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম ‘পোকা ধরা ও পচা’ বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে এ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়।

এর আগে গত ২৮ জুন গম আমদানির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট পাভেল মিয়া।

রিটে দুদকের মাধ্যমে তদন্ত এবং বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বারি) মাধ্যমে গম পরীক্ষার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এ ছাড়া মানহীন গম আমদানি এবং সরবরাহ কেন আইনগত কতৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, বিএসটিআই ও বারির ল্যাবেরটরিতে পরীক্ষার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, অনিয়মের অভিযোগ কেন তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হবে না মর্মে রুল চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি করে ৩০ জুন হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। ওই গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি না, সে বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদেশ অনুযায়ী, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পাঠানো প্রতিবদন গত ৫ জুলাই আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

বাংলাদেশ শিল্প বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে মহাপরিচালকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানি করা গমের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন জেলার খাদ্য গুদাম মজুদকৃত গমের ৫৭টি নমুনা নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম চুক্তিপত্রের নির্দেশ অনুসারে গ্রহণীয় সীমার মধ্যে থাকায় মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত বলে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে প্রত্যয়ন করা হয়।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের মান নিয়ে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আপত্তি তোলা হয়েছিল। ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো বিভাগ এর মান নিয়ে কোনো সনদ দেয়নি। বন্দরে অবস্থানকারী খাদ্য অধিদপ্তরের রসায়নবিদেরা এই গমের বেশ কয়েকটি চালানকে ‘বি’ ক্যাটাগরির বা মাঝারি থেকে নিম্নমানের হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।

এসব জেনেও খাদ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক সারোয়ার খান চট্টগ্রাম বন্দরে আসা এ গমের ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন। অধিদপ্তরের আমদানি-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত, চিঠি ও পর্যালোচনা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম কাউকে নিতে বাধ্য করা যাবে না এবং কেউ ফেরত দিতে চাইলে সরকারকে তা ফেরত নিতে হবে মর্মে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন।



মন্তব্য চালু নেই