ব্রিটিশ নারীকে ১৩ বছর আটকে রেখে ধর্ষণ!

আন্না রুস্টন নামে এক ব্রিটিশ নারী তাকে অপহরণের পর কীভাবে ১৩ বছর ধরে আটকে রেখে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তার রোমহর্ষক গল্প বলেছেন।
তার দাবি তাকে বেডরুমে আটকে রাখা হয়েছিল এবং প্রতিদিন মারধর করা হত।

এবং অপহরণকারী তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসাও করিয়েছেন। আর আটক থাকা অবস্থায় তার গর্ভে যে চারটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল তাদেরকে বিক্রি করে দিয়েছেন তার অপহরণকারী।
ডেইলি মিররকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এখনো ওই বেডরুম এবং এর সেই কোনটি আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যেখানে আমি যন্ত্রণায় কুঁকড়ে পড়ে থাকতাম। ”
“একটা সময় পরে গিয়ে আমি আর ব্যাথা অনুভব করত পারতাম না। তখন আমি ভেবেছি আমার শরীর হয়তো পুরোপুরি অসাড় হয়ে গেছে। ”
তিনি আরো বলেন, “সেখানে একটি ক্যানকে আমি টয়লেট হিসেবে ব্যবহার করতাম। যার গন্ধ এখনো আমার নাকে লেগে আছে। আমি এমন এক অবস্থায় পৌঁছে যাই যেখানে আমি আর জানতামনা জীবন মানে কী। ”
তার এই গল্পটি আরেক ব্রিটিশ নারী এলিজাবেথ ফ্রিটজেল এর গল্পের মতোই। যিনি ২৪ বছর ধরে মাটির নিচের একটি বাঙ্কারে আটক ছিলেন। যেখানে রেখে তাকে তার বাবা জোসেফ ফ্রিটজেল নিয়মিতভাবে ধর্ষণ করেছিলেন।
নিজের জীবনের এই রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা নিয়ে রুস্টন “সিক্রেট স্লেভ” নামের একটি বই লিখেছেন। রুস্টন বলেন, মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার সঙ্গে ট্যাক্সি চালক “মালিক” এর দেখা হয়। সে সময় রুস্টন খুবই অসহায় অবস্থায় ছিলেন। আর এর সুযোগ নিয়েই মালিক তার প্রতি আগ্রহী হন এবং একদিন তাকে তার বাড়িতে তার মা এবং ভাইদের স্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দাওয়াতে দেন।
মালিকের বাড়িতে যাওয়ার পরপরই মালিক তাকে “সাদা বিষ্ঠা” বলে গালাগাল করে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে একটি ঘরে নিয়ে তাকে বন্দি করে রাখা হয়, যেখানে রেখে তাকে টানা ১৩ বছর ধরে ধর্ষণ করা হয়।
রুস্টন আরো জানান, তাকে মালিক পতিতাবৃত্তিতেও বাধ্য করেছে। আর এই ১৩ বছরে তিনি যে চারটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
রুস্টন আরো জানান, তিনি দুবার পালাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পালানোর চেষ্টা করায় মালিক তাকে বেদম প্রহার করেন।
পালাতে ব্যর্থ হয়ে রুস্টন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ব্যাথানাশক ওষুধ খেয়ে, নিজেকে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়ে বা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রিজের শ্বাসরোধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন রুস্টন।
একবার রুস্টন ও তার পরিবারের সদস্যরা ঈদের নামাজ পড়তে গেলে এক স্বাস্থ্য পরিদর্শকের সহায়তা রুস্টন ওই নির্মম বন্দীত্ব থেকে মুক্তি পায়। রুস্টন এক টুকরো কাগজে লিখে ওই স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কাছে তাকে মুক্ত করার আহবান জানায়।
এরপর ওই স্বাস্থ্য পরিদর্শক আরেকটি কাগজে লিখে দেনযে তিনি ঘরের ফোনে তিনবার রিং দিলে রুস্টন যেন সামনের দরজার দিকে দৌঁড়ে যায়। যেখানে দরজার একটি চাবি রাখা থাকবে।
মুক্ত হওয়ার পর গত ১৬ বছর ধরে তিনি তার প্রথম বয়ফ্রেন্ড জেমির সঙ্গে সংসার করছেন। তাদের ঘরে এখন চারটি সন্তান আছে।
রুস্টন জানান তিনি এতটাই আতঙ্কিত ছিলেন যে, পুলিশকে তার বন্দীত্বের ব্যাপারে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ সরবরাহ করার সাহস পাননি। তবে চিকিৎসার সময় তাকে তার অভিজ্ঞতা লিখে বর্ণনা করতে উৎসাহিত করা হয়। যা চিকিৎসারও একটি অংশ ছিল।
সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট



মন্তব্য চালু নেই