ভারতীয় সিরিয়ালে ‘অনুপ্রাণিত’ হয়েই সহপাঠী খুন

নাটোর শহরের আলাইপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র তানভীকে (১১) নির্মমভাবে খুন করার পেছনে ‘অবদান’ রয়েছে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালের। সিরিয়ালে দেখানো খুনের ঘটনার আদলেই সহপাঠী শিশুরা মিলে হত্যার ঘটনা ঘটায়। তবে সেখানেই তারা থেমে থাকেনি। ঠাণ্ডা মাথায় খুনের পরে নিহতের বাবার কাছে চেয়েছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

খুনের সঙ্গে জড়িত আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলম হাফিজিয়া মাদরাসার তিন ছাত্র বায়েজিদ, হুসাইদ ও নাইমকে আটক করার পর এমন তথ্য পেয়েছে র‌্যাব সদস্যরা।

নিহত তানভীর আশরাফুল উলুম মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র এবং নাটোর জেলা শহরের বড়গাছা হাফরাস্তা এলাকার সাইফুল ইসলাম তুষারের ছেলে।

গত ২৫ আগস্ট রাতে তানভীরকে মাদরাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে ওই তিন সহপাঠী। এরপর তার বাবা সাইফুল ইসলামের কাছে মুক্তিপণ দাবি করলে তিনি বিষয়টি র‌্যাবকে জানান। এরপরই র‌্যাব-৫ এর সদস্যরা অভিযানে নামে খুনিদের ধরতে। এক পর্যায়ে সোমবার রাতে প্রথমে বায়েজিদকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে, হুসাইদ ও নাইমকেও আটক করে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের দেয়া তথ্যমতে, মাদরাসার সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

র‌্যাব জানায়, ২৫ আগস্ট রাতে আশরাফুল উলুম মাদরাসার দুই শিক্ষার্থী বায়েজিদ, হুসাইদ ও তাদের বহিরাগত বন্ধু নাঈম মিলে হেফজ বিভাগের ছাত্র মোহম্মদ তানভীরকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নেয়। এ সময় তাকে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ও খুর দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে লাশ মাদরাসার পাশের একটি পরিত্যাক্ত সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। পরে তানভীরের বাবার কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

ওই ঘটনায় তানভীরের বাবা তুষার ২৬ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করে এবং বিষয়টি র‌্যাবকে জানায়। পরে র‌্যাব-৫ এর সদস্যরা মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বায়েজিদকে আটক করে। এরপর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যা রহস্য উদঘাটন করে এবং অপর দুই জনকে আটক করে।

র‌্যাব-৫ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মাহাবুব আলম জানান, আটক ছাত্ররা দু’দিন আগেই তানভীরকে মেরে ফেলেছিল। কিন্তু তারপরও তারা তানভীরের বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

লে. কর্নেল মাহাবুব আলম জানান, ভারতীয় একটি টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল দেখেই মাদরাসার ছাত্ররা হত্যাকাণ্ড ঘটায়।



মন্তব্য চালু নেই