ভারতের ভোটেও বাংলাদেশের চিত্র!

পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল, বিধাননগর ও হাওড়া পৌরসভার ভোটগ্রহণ হয়েছে আজ শনিবার। একই সঙ্গে ভোট নেয়া হয় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৪১৫টি কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনেরও। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা হবে আগামী ৭ অক্টোবর। তবে ভোটগ্রহণে দেখা যায় শাসক দলের দাদাগিরি। ওইসব এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলোতে আপনি গেলে বাংলাদেশের চিত্রই খুঁজে পেতেন।

ভোটকে ঘিরে সকাল থেকেই সল্টলেক মূলত বহিরাগতদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়। একাধিক বুথে সকাল থেকেই দেখা গেছে বহিরাগতদের। একের পর এক বুথে প্রবীণ নাগরিকেরা কার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অথচ তাদের ভোট দেয়ার ‘অধিকার’ নেই। কারণ বুথের ভেতর পর্দার ওপারে ইভিএমের বোতাম টিপেই চলেছে বহিরাগতরা।

বিধাননগর পৌরসভার একটি ভোট কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ উঠলে সাংবাদিকরা সেখানে যান। কিন্তু সল্টলেকে শাসক দল তৃণমূলকর্মীদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হয় তাদের। এসময় পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ঘটনা দেখছিল। সেই সঙ্গে বহিরাগত দুই এমপি বিধাননগরে ভোটের সময় কী করছেন এমন প্রশ্ন করলেও মার খেতে হয় সাংবাদিক দেবারতি ঘোষ, বিক্রম দাস ও মিন্টু বসাককে। এখানেই শেষ নয় একেবারে দলীয় সাংসদ তাপস পালের আদর্শে ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে মহিলা সাংবাদিক দেবারতি ঘোষকে ‘রেপ’ করে দেয়ার হুমকি দিলেন একদল তৃণমূল কর্মী। দেবারতীর অপরাধ ছিল জাল ভোটের ছবি তুলে ফেলেছিলেন তার সঙ্গী ক্যামেরাম্যান।

একই ভাবে খবর কভার করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক ময়ুখঠাকুর চক্রবর্তী, অরিত্রিক ভট্টাচার্য, চিত্র সাংবাদিক পার্থসারথি চক্রবর্তীক, সারমিন বেগম ও তন্ময় দত্ত বিশ্বাস।

বৃদ্ধা ভোটারকে ফেলে বুকে লাথি
বিধাননগর পৌরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের এসি ব্লকে জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় পুলিশের সামনেই প্রবীণ ও নারী ভোটারদের বেধড়ক মারধর ও সিপিএমের পোলিং এজেন্টকে লাথি মারে সরকারপন্থিরা। ভোটকেন্দ্রের সামনেই উদ্ধার হয় অন্য এলাকার ভোটার কার্ড। পরে ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কর্মকর্তারা। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ারও অভিযোগ ওঠে। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশও।

পোলিং এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে মারধর

বিধাননগর পৌরসভার মহিষবাথানে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বুনোপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে বিজেপির পোলিং এজেন্টকে বাইরে বের করে বেধড়ক মারধর করে শাসকদলের বহিরাগতরা। বুথের বাইরে এক নারী বিজেপিকর্মী বাধা দিতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

ভোটারের ভোট দিলেন প্রিসাইডিং অফিসার
বুথে গিয়ে নিজেই ভোট দিলেন প্রিসাইডিং অফিসার। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকির খাসখোল এলাকায়। মিলকির খাসখোল ২১৮ বুথে চলছিল পঞ্চায়েত সমিতির উপ-নির্বাচন। এক ভোটার এই বুথে ভোট দিতে গেলে উপস্থিত থাকা প্রিসাইডিং অফিসার দীপেন্দু মিশ্র নিজেই মেশিনে তার ভোট দেন। ঘটনা জানা জানি হলে অবশ্য শোকজ করা হয় এই প্রিসাইডিং অফিসারকে। তাকে সেই বুথ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ তিন ভোটার
আসানসোল পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ডে ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিন ভোটার। গুলিবিদ্ধ তিন ভোটার হলেন- রাজা মল্লিক, রাহুল হেনা ও শুকলাল কর্মকার। জানা যায়, এই ভোটাররা ভোট দিতে যাওয়ার সময় আচমকা হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। এই তিনজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে তারা। এতে রাজা মল্লিকের পায়ে গুলি লাগে। এছাড়াও রাহুল ও শুকলাল এই দুই ভোটারের হাতে গুলি লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই