ভারতে নদী দূষণের অভিযোগ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে

তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার আরেকটি সীমান্ত পারের নদী ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ‘চুর্নী’ নদী নিয়ে। কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদী থেকে মাথাভাঙা নদীটি উৎপন্ন হয়ে ভারতের নদীয়া জেলার মাজদিয়াতে এসে দুইটি প্রবাহে ভাগ হয়ে একটি শাখা ইছামতি নদী নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে, অন্যটি চুর্নী নামে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাজদিয়া, শিবনিবাস, হাঁসখালি, বীরনগর, আরংঘাটা, রানাঘাট, চাকদহ দিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে হুগলী নদীতে মিশেছে।

সেই চুর্নী নদীকে এবার দূষিত করার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে নদীয়া জেলার একটি সামাজিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার চুর্নী নদীর পানি সংগ্রহ করে তা বোতলজাত করে পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে।

সামাজিক সংস্থাটির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বাংলাদেশের কারখানা থেকে অনবরত বর্জ্য পদার্থ নদীর পানিতে মিশে তা ভারতে ঢুকছে। এই কারখানাগুলো থেকে বর্জ্য পদার্থ আসা ঠেকাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে পদক্ষেপ নেন সে বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে মোদিকে।

সূত্র মতে, ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশনের তরফেও চুর্নী নদীর দূষণের বিষয়টি বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়।

নদীয়া জেলা ১৮ আগস্ট পরিচালন সমিতির (এনডিএপিএস) তরফে অঞ্জন সুকুল জানান, মাছধরা থেকে শুরু করে কৃষিকাজ সবকিছুতেই স্থানীয় মানুষরা চুর্নী ও মাথাভাঙা নদীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অনবরত পানি দূষণের ফলে সবকিছুই আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এরপরই নদীর পানি প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিই’।

সংগঠনটির তরফ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এই সমস্যা মেটাতে ভারত সরকার ঢাকার সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই একটা সমাধান বের করবে বলেও আশাবাদী তারা। অন্যথায় বড় আন্দোলনে নামার হুমকিও দেয়া হয়েছে।

‘চুর্নী’ নদী নিয়ে এমন একটা সময় হৈ চৈ শুরু হলো যখন বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য চলছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশি দেশটির সাথে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত করার বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করলেও বাধা হয়ে আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার বক্তব্য তিস্তার পানি গেলে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে।



মন্তব্য চালু নেই