ভারত-পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলো

এশিয়া কাপের চতুর্থ ম্যাচে শনিবার মাঠে নামছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। দুই দলের লড়াই মানে টানটান উত্তেজনা। দুই দলের খেলা হলেই ক্রিকেট বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। শনিবারের ম্যাচকে সামনে রেখে চলছে একই উত্তেজনা। টিকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি। চায়ের দোকান অফিস- আলোচনা চলছে সর্বত্র।

দুই দল এখন পর্যন্ত ১২৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেললেও ২০০৭ থেকে এখন ২০১৬ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে মাত্র ৬টি। ওয়ানডেতে পাকিস্তান (৭২ জয়) দাপট দেখালেও টি-টোয়েন্টিতে ভারতের জয়ের পাল্লা ভারী। ৬ ম্যাচে ভারতের জয় ৪টিতে। পাকিস্তানের মাত্র ১টিতে। ১টি ম্যাচ ফল নির্ধারণ হয়েছে বল আউটে। সে ম্যাচেও জয় পেয়েছিল ভারত। সে হিসেবে ৬টির ৫টিতেই জয় ভারতের।

ভারত-পাকিস্তানের মহারণকে সামনে রেখে ক্রীড়া বিভাগ ভারত-পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোকে তুলে ধরছে :

২০০৭ সাল, ১৪ সেপ্টেম্বর :
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তানের লড়াই আলাদা রোমাঞ্চ তৈরি করে। দুই দলও রোমাঞ্চের সবটুকু ম্যাচে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ম্যাচের ফলাফল সবারই জানা। টাই হওয়া ম্যাচ বল আউটে জিতে নেয় ভারত।

আগে ব্যাটিং করে ভারত ৯ উইকেটে ১৪১ রান করে। জবাবে পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে তুলে নেয় ১৪১ রান। দুই দলের প্রথম অর্ধের লড়াই অমীমাংসিত থাকে। অনফিল্ড আম্পায়াররা বল আউটে ম্যাচ ফল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারত জিতে গেলেও ৪ ওভারে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আসিফ।

২০০৭, ২৪ সেপ্টেম্বর :
একই বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচে ৫ রানে জয় পায় ভারত। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ভারত শেষ হাসি হাসলেও ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছিল না কার ভাগ্যে জুটছে টি-টোয়েন্টির প্রথম শিরোপা। গৌতম গম্ভীরের ৭৫ রানে ১৫৭ রানের পুঁজি পায় ভারত।

ব্যাটিংয়ে ইমরান নাজিরের ঝড়ো ৩৩ রানে লক্ষ্যের পথে ভালোই এগিয়ে যায় পাকিস্তান। কিন্তু ইনিংসের মাঝপথে ভারতীয় বোলারদের দাপটে ম্যাচ হারের শঙ্কা জাগে পাকিস্তানের। কিন্তু শেষ দিকে মিসবাহ-উল-হকের দানবীয় ব্যাটিংয়ে আবারো চিত্র বদলে যায়। শেষ ওভারে ৬ বলে ১৩ রানের প্রয়োজনে ব্যাটিং করে মিসবাহ প্রথম দুই বলে ব্যবধান ছয়ে নামিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু তৃতীয় বলে নিজের ভুলে ক্যাচ উঠিয়ে পাকিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ করেন মিসবাহ।

২০১২, ৩০ সেপ্টেম্বর :
৫ বছর পর ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আবারো মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। প্রথম দুই ম্যাচের সাফল্য ধরে রেখে তৃতীয় ম্যাচেও জয় পায় ভারত। ৮ উইকেটে জয় তুলে নেন ধোনির দল।

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান মাত্র ১২৮ রান জমা করে। জবাবে বিরাট কোহলির একক অধিপত্যে ১৭ ওভারেই জয় তুলে নেয় ভারত। ৭৮ রান করে অপরাজিত থাকেন কোহলি।

২০১২, ২৫ ডিসেম্বর :
২০১২ সালের শেষ দিকে প্রথমবারের মত দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে ভারত-পাকিস্তান। অবশ্য বিশ্বমঞ্চের বাইরে প্রথম ম্যাচে সফল পাকিস্তান। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারায় তারা।

আগে ব্যাটিং করে ভারত স্কোরবোর্ডে ১৩৩ রান করে ৯ উইকেট হারিয়ে। জবাবে মোহাম্মদ হাফিজের ৬১ ও শোয়েব মালিকের ৫৭ রানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জয় পায় পাকিস্তান।

২০১২, ২৮ ডিসেম্বর :
পাকিস্তানের জয়ের তিন দিনের ব্যবধানে ঘরের মাঠে প্রতিশোধ নেয় ভারত। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ ড্র করে ভারত। ১১ রানে জয় পায় ভারত। আগে ব্যাটিং করে ভারত ২০ ওভারে ১৯২ রানের বড় পুঁজি পায়।

ভারতকে বড় সংগ্রহ এনে দেন যুবরাজ সিং। ৩৬ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ৭২ রান করেন যুবরাজ। জবাবে হাফিজের ৫৫ রানে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে গেলেও শেষ হাসিটা হাসে ভারত। অশোক দিন্দার বোলিংয়ে জয় পায় ভারত। ৩৬ রানে ৩ উইকেট নেন ডানহাতি এ পেসার।

২০১৪, ২১ মার্চ :
ভারত-পাকিস্তানের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি যুদ্ধ হয়েছিল ঢাকার মিরপুরেই। অনুমিতভাবেই জয় পায় ভারত। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে নিজেদের সামনে দাঁড়াতে দেয়নি ভারত।

আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান মাত্র ৭ উইকেটে ১৩০ রান জমা করে। সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন উমর আকমল। জবাবে বিরাট কোহলির ৩৬, সুরেশ রায়নার ৩৫ ও শেখর ধাওয়ানের ৩০ রানে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় ভারত।



মন্তব্য চালু নেই