ভালবাসা দিবস শোক না বাসনার

আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এই দিনটিকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলদের নানা পরিকল্পনার শেষ নেই। কোথায় বেড়াতে যাবে, কী করবে তা নিয়ে হয়তো অনেকে মাস খানেক আগে থেকেই এই দিনটির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। পরস্পরের মধ্যে দর কষাকষি চলে চাওয়া-পাওয়া নিয়ে।

এবার মূল কথায় আসা যাক, আমার মনে হয় যে দিবসটা আমরা এতো ঘটা করে পালন করি, তার ইতিহাস বা কেন ও কোন প্রেক্ষাপটে দিবসটির জন্ম হল তা মনে হয় সবারই জানা দরকার। শুধু কোনো দিবসই নয়, যেকোনো বিষয়ের ক্ষেত্রেই যদি আমরা তার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারি এবং মূল উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে পারি, তাহলে মনে হয় আমরা সেই বিষয়ের মূল যে চাওয়া বা প্রতিপাদ্য বিষয়, সেটি থেকে বিচ্যুত হবো না।

উইকিপিডিয়ায় ভালবাসা দিবসের উৎপত্তি সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা এরকম যে, ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে ২৬৯ সালের যেকোনো দিন তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দি করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দি অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। তাতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর সেই দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। অতঃপর পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স এর স্মরণে ৪৯৬ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস ঘোষণা করেন।

ভালবাসার এই ইতিহাস জানার পর আমার কাছে মনে হয়েছে, এ দিনটি সকল প্রেমিক যুগলদের জন্য অত্যন্ত শোকের দিন হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রেক্ষাপট উল্টে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে দুষ্ট প্রকৃতির ভণ্ড প্রেমিক-প্রেমিকারা।

তাই সকলের কাছে চাওয়া এ দিনটিকে আমরা শোকের না হলেও বাসনার দিবস হিসেবে বিবেচনা না করি। আর ভালবাসা দিবসটি পালিত হোক বিশুদ্ধ ভালবাসায়।



মন্তব্য চালু নেই