ভালোবাসার ১৪ বছর পূর্তিতে প্রাণ-কাকলী

দুজনই শিল্পী মানুষ। পড়েছেনও চারুকলায়। একে অপরকে চেনাজানা থেকে কাছে আসা। তারপর প্রেম। বিয়ের ১৪ বছর পরও অটুট আছে সেই ভালোবাসা। বলছিলাম জনপ্রিয় অভিনেতা প্রাণ রায় ও নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলীর কথা। ৯ ডিসেম্বর ছিলো তাঁদের বিবাহবার্ষিকী। তবে চুপিসারেই বিয়ে বার্ষিকী পালন করায় জানজানি হয় নি তেমন। তবে ১২ তারিখ রাতে হঠাৎ করেই কাকলীর ফেসবুকে দেখা গেল তাঁদের বিবাহবার্ষিকী পালনের ছবি।

হাসিমুখেই যৌথ-জীবনের ১৪ বছর পার করলেন তাঁরা। বিবাহ বার্ষিকীর এ দিনটি পালনও করলেন বেশ আনন্দ উৎসবের সঙ্গেই। যদিও শাহনেওয়াজ কাকলী এটাকে নিতান্তই ঘরোয়া আয়োজন বলে মনে করেন। তবুও তাদের হাস্যোজ্জল উপস্থিতি আর অতিথিদের অভ্যর্থনা স্বাক্ষ্য দেয় একেবারে ঘরোয়াও ছিলো না বিবাহ বার্ষিকীর এ অনুষ্ঠান।

গুলশানের কস্তুরী গার্ডেন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের শুভ কামনা জানাতে এসেছিলেন মিডিয়ার অনেকেই। সালাউদ্দীন লাভলু, মোরশেদুল ইসলাম, রেহানা জলি, ফেরদৌস, সোহানা সাবা-সহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন নাহিদ ওসমান।

যৌথ জীবনের ১৪ বছরে পদার্পনে সবার কাছে শুভ কামনা চেয়ে কাকলী বলেন, ‘আমার জীবনে ছোটবেলা থেকেই একটা চাওয়া ছিলো আমি সুখী হবো। হয়েছিও। তবে আমি মনে করি সুখটা আসলে নিজের মাঝে। আর যে মানুষটাকে নিয়ে সুখী হবো সেই মানুষটাকে আগে বুঝতে হবে। তাকে পড়তে হবে। মানুষটাকে পড়তে পারলেই তাকে বোঝা যায়।এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা মানুষের জীবনে খুবই জরুরি। আর সুখী হওয়ার জন্য প্রয়োজন স্বাধীনতা পাওয়া। আমি অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই নিজেকে সুখী মনে করছি। আমার চাওয়া পাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় প্রাণের সহযোগিতা পেয়েছি। আমার কোনো কিছুতেই কখনো প্রাণ না করেনি। প্রথম প্রথম ওকে ছাড়া ঘুরতে যেতে পারতাম না। পরে প্রাণই আমাকে বলেছে, একা একা ঘুরার মাঝেও আলাদা একটা মজা আছে। আলাদা একটা ফিলিংস আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাণের যে ভাল গুণ, সেটা হচ্ছে আমার আনন্দটাই ওর আনন্দ। আমি অড্ডা দিচ্ছি, বা কেনাকাটা করছি, বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি, আনন্দ করছি-আর এটা যখন ওকে ফোনে জানাচ্ছি তখন ওর গলাটাও আনন্দে ভরে যেতে দেখেছি।’

দাম্পত্য জীবনে সুখের পাশে কিছু কিছু দুঃখও থাকে। থাকে মান-অভিমান, ঝগড়া-ঝাটিও। এ প্রসঙ্গেও অকপটে বললেন কাকলী, ‘আমার রাগটা বিদ্যুতের মতো। আমি রাগ করলে দু মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আর ওর রাগটা থেকে যায় ঘন্টা খানেক পর্যন্ত। আর এসব বেশিরভাগ হয় প্রোডাকশন বা আমাদের কাজ নিয়ে। আমি হয়তো এ নাটকটা করতে চাচ্ছি ও হয়তো না করছে। আর এ নিয়েই আমাদের মাঝে শুরু হয়ে যায় ঝগড়া। তবে ঝগড়া করার দু মিনিটের মাথাতেই আমার রাগ কমে যায়। আর ও রাগ করলে ঘন্টা খানেক থাকে এটা আমি জানতে পরেছি প্রায় ১ বছর পর। তবে এটা ঠিক অনেক বড় ধরনের ঝগড়া হলেও সর্বোচ্চ তিন ঘন্টার মধ্যে রাগ শেষ হয়ে যায়। আর যদি আমি কখনো না খেয়ে থাকা অবস্থায় ঝগড়া হয় তাহলে রাগের মধ্যেই ওর চেষ্টা থাকে আমাকে ভাত খাওয়ানো। ভাত খেলেই আমার রাগ কমে যেতে পারে। আমি না খাইতে চাইলে ও পিছে পিছে ভাত নিয়ে ঘুরে, নিজহাতে ভাত মাখিয়ে খাইয়ে দেয়।’

নিজেদের অম্ল-মধুর এ সম্পর্ক নিয়ে প্রাণ রায় বলেন, ‘প্রতি বছর ওকে ফুল দিয়ে শুভ কামনা জানাই। এবারও তাই করেছি। আর আমরা বন্ধু ছিলাম, বন্ধু আছি, বন্ধু থাকবো। ওর আর আমার সম্পর্ক কিন্তু এখনো সেই আগের মতোই আছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমরা তো ক্লাসমেট ছিলাম। এখনো ঐ মুডটা আছেই। এখনো তুই-তুকারি করেই কথা বলি। আর ওর বন্ধু আর আমার বন্ধু তো একই। ফলে এখনো আগের মতোই আড্ডা হয়।’

নিজেদের বোঝাপড়া নিয়ে বলেন, ‘আমাদের বোঝাপড়া বেশ ভালো। আর ও যদি আমাকে না বুঝতো তাহলে শুটিং করতে গিয়ে অনেক সমস্যা হতো। আর ও নিজেই যেহেতু পরিচালক কারণে বাড়তি সুবিধায় পাচ্ছি।



মন্তব্য চালু নেই