ভিসেরা প্রতিবেদন: তনুর দেহে বিষক্রিয়া মেলেনি

কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু ভিসেরা পরীক্ষার প্রতিবেদন চট্টগ্রামের ফরেনসিক ল্যাব থেকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে ১০ দিন আগে। সেই প্রতিবেদনে তনুর দেহে বিষক্রিয়া মেলেনি বলে জনিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ফরেনসিক ল্যাব থেকে তনুর ভিসেরা পরীক্ষার প্রতিবেদন ১০ এপ্রিল ডাকযোগে কুমিল্লায় পাঠানো হয়। বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে কি না, এটা জানতে ভিসেরা পরীক্ষা করা হয়। তনুর ক্ষেত্রে এমন কিছু পাওয়া যায়নি।

অথচ এই ভিসেরা বা ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য আটকে আছে তনুর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। বুধবার তনুর চাচা-চাচিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। পরে তদন্ত-সহায়ক দলের প্রধান ও সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন তথ্য যাচাই করতে ওই পরিবারের সদস্যদের বারবার জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘দ্রুত একটি ফলাফল দিতে পারব। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’ সিআইডির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দিলীপ কুমার সাহা ভিসেরা প্রতিবেদন পাঠানোর কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

২১ দিন আগে তনুর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের প্রধান ছিলেন কামদা প্রসাদ সাহা। তিনি গতকাল বলেন, ‘ফরেনসিক প্রতিবেদনটি পেয়েছি কি না, তা বলতে পারব না। ময়নাতদন্ত সম্পর্কেও কিছু বলতে পারব না।’

যদিও কামদা প্রসাদ সাহা গত শনিবার বলেছিলেন, ফরেনসিক প্রতিবেদন এলেই দ্রুত তনু হত্যার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

এদিকে কুমিল্লায় গতকাল বুধবারও তনু হত্যার বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। এক মাসেও তনুর খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এইড কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া বেগম। কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জোহরা আনিস বলেন, সবাই তনুর খুনিদের দেখতে চায়। এই হত্যার বিচার হতেই হবে।

সোহাগী জাহান তনুর মৃতদেহের প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়েছিল সপ্তাহ তিনেক আগে। তখন চিকিৎসকরা এবং পুলিশ জানিয়েছিল, ময়নাতদন্তের ঐ রিপোর্টে তনুকে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তাতে তাঁর মৃত্যুর কারণও জানা যায়নি।

এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কবর থেকে তনুর মৃতদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা বলেছেন, দ্বিতীয়-দফা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চূড়ান্ত হতে আরও সময় প্রয়োজন।

গত ২০শে মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে তনুর মৃতদেহ পাওয়ার পর সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়। তনুকে হত্যার অভিযোগে মামলায় এখনও কেউ আটক হয়নি। পুলিশ বলেছে,সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে চিহ্নিত করার পরই আটকের প্রশ্ন আসবে। (প্রথম আলো)



মন্তব্য চালু নেই