ভুঞাপুরে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ব্যবসায়ীদের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচিত

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার স্যানিটারি ইন্সপেক্টও রোকেয়া বেগম ব্যবসায়ীদের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচিত। নগদ অর্থসহ পিঁয়াজ, রসুন, তেল ও মসলা জাতীয় পণ্য  থেকে শুরু করে কোন দ্রব্যই বাদ নেই তার চাঁদাবাজির তালিকা থেকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিয়ন শের আলীকে সঙ্গে নিয়ে ভূঞাপুর উপজেলার প্রতিটি এলাকা চষে বেড়ান তিনি। প্রায় শ’খানেক দোকান থেকে তিনি আদায় করেন মাসোহারা। চাঁদা না দিলে ভয় দেখানো হয় মামলার। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন উপজেলার ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে কর্মরত স্যানিটারি ইন্সপেক্টও রোকেয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে ওই পদে কাজ করছেন। গ্রামের বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা গ্রামে হওয়ায় এলাকার আনাচে-কানাচে তাঁর অবাধ যাতায়াত। সবই তার চেনা-জানা তাঁর। বিভিন্ন ধরণের পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে উপজেলার পৌরএলাকা, গোবিন্দাসী, ফলদা, মাটিকাটা, নিকরাইল, নিকলা ও পাথাইলকান্দি বাজার চষে বেড়ান তিনি। বিশেষ করে হাটের দিন ওইসব এলাকা তার প্রধান টার্গেট। এলাকার ব্যবসায়ীরা তাকে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জানে। দাপটও তার সেই রকমই। মামলার ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও তার চাঁদাবাজির তালিকা থেকে বাদ যায় না পিঁয়াজ, রসুন, তেল, আদা, মসলা জাতীয় পণ্য সহ অন্যান্য দ্রব্যাদি। প্রায় শ’খানেক দোকান থেকে তিনি পেয়ে থাকেন মাসোহারা। পিয়নকে সঙ্গে নিয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের এমন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। মামলার ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।
উপজেলার গোবিন্দাসী, মাটিকাটা, নিকরাইল, নিকলা ও পাথাইলকান্দি বাজারের ব্যবসায়ী রহিম, আজিজ, মোশারফ, মিন্টু, রাসেল, সোহেল, করিমসহ নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো অনেকেই জানান, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রোকেয়া দোকানে ঢুকে পরিষ্কার-পরিছন্নতার কথা বলে চাঁদা দাবি করেন। না দিলে মামলা দেয়া হবে বলে ভয় দেখান। কি আর করবো বাধ্য হয়ে ১০০ টাকা দিয়ে দেই। মাসে দু’একবার এসে ২ লিটার কওে তেলের বোতল চায় পরীক্ষার জন্য। শুনেছি ওনি মামলা দিলে জেল খাটতে হয়। তাই ঝাঁমেলায় না গিয়ে টাকা এবং তেলের বোতল দু’টোই দিয়ে দেই। ব্যবসা যখন করতেই হবে তাই ঝাঁমেলায় গিয়ে লাভ কি?
এভাবেই প্রতিনিয়ত চলছে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রোকেয়া বেগমের নীরব চাঁদাবাজি। মামলার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া তো দূরের কথা মুখে বলতেও সাহস পায় না। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর রোকেয়া বেগম বলেন, আমি কোন চাঁদাবাজি করি না। পরিষ্কার-পরিছন্নতা দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকায় যাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল আওয়াল বলেন, আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।



মন্তব্য চালু নেই