ভোট কেনার টাকা আদায়ে মাঠে পরাজিতরা

যশোরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন হাফিজুর রহমান ও অরবিন্দু হাজরা। নির্বাচনে জয়ী হতে ভোটারদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছিলেন তারা। মাথাপিছু ১০-১৫ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি ভোটাররা। টাকা নিয়েও তাদের ভোট দেয়নি চেয়ারম্যান-মেম্বররা। ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেছে হাফিজুর রহমান পেয়েছেন মাত্র ৩ ভোট এবং অরবিন্দু হাজরা পেয়েছেন ১৪ ভোট। টাকা নিয়ে ভোট না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ এই দুই প্রার্থী এখন ভোটারদের কাছ থেকে তাদের টাকা ফেরত চাচ্ছেন।

তাদের দাবি, ভোটারদের কাছে হাফিজুর রহমান পাবেন ৪ লাখ টাকা, আর অরবিন্দু হাজরা পাবেন অন্তত ৬ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে আড়াই লাখ টাকা হাফিজুর আদায় করেছেন বলে দাবি করেছেন। অপরদিকে অরবিন্দু হাজরা শুক্রবারের মধ্যে তার টাকা ফেরত পাবেন বলে আশাবাদী। ভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন মণিরামপুর উপজেলার কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বররা।

২৮ ডিসেম্বর যশোর জেলা পরিষদের ১৫ ওয়ার্ডের মধ্যে মনিরাপুর উপজেলার মনিরামপুর পৌরসভাসহ, মনিরামপুর সদর, ঢাকুরিয়া, শ্যামকুড়, খানপুর ও দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১২নং ওয়ার্ডে ৫ জন ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ভোট গ্রহণ শেষে ফল প্রকাশের পর এ ওয়ার্ডে গৌতম চক্রবর্তী জয়ী হলে ওই দিনই টাকা ফেরতে মাঠে নেমে পড়েন তারা।

পরাজিত প্রার্থী হাফিজুর রহমান জানান, ভোটের ফল প্রকাশের পর ওই দিন বিকেলেই তার কাছ থেকে টাকা গ্রহণকারী কয়েক ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বরদের টাকা ফেরতে জোর তাগিদ দেন তিনি। ওই রাতেই তিনি ২ লাখ টাকা আদায় করতে সক্ষম হন বলে তিনি দাবি করেন।

অপর পরাজিত প্রার্থী অরবিন্দু হাজরা দাবি করেন, ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় ৬৫ জন ইউপি সদস্য ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করেন। তিনিও টাকা ফেরতের জোর তাগিদ দিয়েছেন। তাকে শুক্রবার টাকা ফেরত দিবেন বলে টাকা গ্রহণকারী ইউপি সদস্যরা তাকে আশ্বস্ত করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

পরাজিত প্রার্থীদের দাবি অনুযায়ী টাকা গ্রহণকারী কয়েকজনের ইউপি সদস্য জানান, যে টাকা দেওয়া হয়েছিল তা ভোটের দিন ফেরত দিয়েছি। শুধু এই ওয়ার্ডে নয়, অন্য ওয়ার্ডেও অনুরূপ খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, যারা টাকা দিয়েছেন এবং যারা গ্রহণ করেছেন তারা সমান অপরাধী।

যশোর জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ ছিল। তবে নির্বাচনের পরে এ বিষয়ে কিছু করার আছে বলে মনে হয় না।’



মন্তব্য চালু নেই