ভোলায় মেঘনার ব্যাপক ভাঙ্গন, কয়েক’শ বাড়ি ঘর দোকানসহ সড়ক বিলীন

ভোলা সদর উপজেলার উত্তরের জনপদ রাজাপুর ও ইলিশা ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। কিন্তু নদী ভাঙ্গনের কারনে প্রতি বছর নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। গত ১৮ জুলাই থেকে হঠাৎ করে ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় উত্তাল মেঘনা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ভর্তি বালির ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার জন্য চেষ্টা চালায়। কিন্তু তারা ভাঙ্গন রোধ করতে পারছে না। গত ৪/৫ দিন ধরে ভাঙ্গনে প্রায় ৭০০ শ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। গত এক মাসের ভাঙ্গনে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার বহু স্থাপনা হারিয়ে গেছে মেঘনা নদীতে।

ইলিশা চডার মাথায় গত কয়েক দিন ধরে আবার ভয়াবহ ভাঙ্গনে কয়েক শত বসত ঘর দোকানপাট, ভোলা-লক্ষীপুর মহা সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা সহ সর্বগ্রাসী মেঘনা নদীর বক্ষে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ভর্তি বালির বস্তা ফেলেও ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধ করতে পারছে না। ইলিশা চডার মাথায় এখন এক ধ্বংসযজ্ঞ জনপদে পরিনত হয়েছে। সর্বহারা মানুষ গুলোর চোখে এখন নিরবে জল পড়ছে। অভিযোগ উঠেছে পাউবো ডিজাইন অনুযায়ী কাজ না করে ধীর গতিতে জিও ব্যাগ ভর্তি বালির বস্তা ফেলার কারনেই ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছেনা। এতে করে চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ।

গত ১০ দিন আগে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও পানি সম্পদ মন্ত্রী আমিনুল ইসলাম মাহামুদ যে রাস্তা দিয়ে হেটে গিয়ে ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করে জন সমাবেশ করেছেন সেই রাস্তাটি এখন আর নেই। সেটিও বিলীন হয়ে গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রী গত ১০ দিন আগে ভোলায় পরির্দশনে এসে বড় সাইজের কয়েক টন ওজনের বালির বস্তা ফেলার কথা বললেও তা এখনও ফেলা হয়নি। এমনি ডিজাইন অনুসারে কাজ করা না হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

চডার মাথার এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙ্গনে অসহায় মানুষ শেষ সম্বল ঘরের মালামাল সরানোর সময় পর্যন্ত পাচ্ছে না। অনেক পরিবার না খেয়ে রাজাপুর ইউনিয়নের রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে ঠাই নিয়েছে। সেখানে গেলে মনে হয় এক বিরান ভূমি। স্থানীয় ভাঙনে রোধের প্রটেকশন কাজ এখন হচ্ছে কিন্তু যদি ভাঙনের আগে ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে মানুষকে এভাবে বিপদের মধ্যে পড়তো হতো না।

ভোলা পাউবো ঠিকাদার খোকন গোলদার বলছে বার্জ এনে বালির বস্তা ফেললে হয়তো কাজ হতো। কিন্তু নদীর ¯্রােতের কারনে সম্ভব হচ্ছে না।

এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম স্বীকার করেন,বর্ষা মৌসুমে ডিজাইন অনুষারে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত এক মাস ধরে কাজ চলায় শ্রমিকরা এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভাঙন রোধ না হওয়ায় পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড সব ধরনের পদক্ষেপ নিবে। ভাঙন রোধে সাধ্য মতো কাজ করে যাচ্ছে পাউবো। ইতো মধ্যে চডার মাথার ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা দিয়ে যাতে কোন পানি প্রবেশ না করে তার জন্য জরুরী একটি রিং বাঁধ নির্মান করা হয়েছে।

মেঘনার নদীর এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে ৩টি মৎস্য আড়ৎ, জংশন বাজার, ২টি মসজিদ, শত শত ঘরবাড়ি, বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাবে। এতে হুমকির মুখে পড়বে ভোলার ৬টি ইউনিয়ন। যে কোনো মুহূর্তে প্লাাবিত হতে পারে পুরো এলাকা।



মন্তব্য চালু নেই