ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে সব ধরণের অপারেশন বন্ধ

মোঃ ফজলে আলম, ভোলা থেকে: স্বাধীনতার আগে ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভোলা সদর হাসপাতাল। এরপর ১৯৯৮ সালে ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নিত করা হলেও জনবল কাঠামো বাড়ানো হয়নি। সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্র থেকে জানায়। তাও কাগজে কলমে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভোলা সদর হাসপাতাল।

জেলার ১৮ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য একমাত্র ভরসা ভোলা সদর হাসপাতালে অধিক সময় ধরে এ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের অপারেশন। ডাক্তার স্বল্পতায় চিকিৎসক নার্সরা দিশেহারা।

ফলে ভোলা সদর হাসপাতালে, ছোট ছোট কাটা ছেড়া ও ভাঙ্গার চিকিৎসা হলেও বড় ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সিজারিয়াল অপারেশনও। এতে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে একদিকে যেমন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রোগীরা অন্যদিকে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়ছে।

জনবলও ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ঔষধ, অক্সিজেন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের।

রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে পর্যন্ত ওষুধ ও পরিক্ষা-নিরিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় বাইরে থেকে ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় তাদের।

জানা গেছে, হাসপাতালে অলটাসনোগ্রাম, রক্ত ও এক্সরে মেশিন থাকলেও ইজিজি মেশিন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। সকল ধরনের পরীক্ষা হয়না হাসপাতালে। রোগীদেও যেতে হয় স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতে। এছাড়াও প্রায় সময়ই অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সরকার থেকে বিভিন্ন ৫০ আইটেমের ইনজেকশন ও ওষুধ সরবরাহ করা হলেও হাসপাতালে ওষুধ সংকট তীব্র। হাসপাতালে সরবরাহ নেই হার্ডের রোগীদের কোন ওষুধ। তাই এ ধরনের রোগীদের পড়তে হয় চরম বিরম্বনায়।

তবে হাসপাতালের স্টর বলেন, মাঝে মধ্যে ওষুধ সংকট থাকে। চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে। এ মুহুর্তে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।

হাসপাতাল সুত্র জানায়, সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন আউটডোরে (বর্হিবিভাগে) ৫’শত রোগী চিকিৎসা নেন। ইনডোরে শতাধিক রোগী ভর্তি হন। এতে দেখা দিচ্ছে শয্যা সংকট।

ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে থাকায় সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভোলা সদর হাসপাতালকে ২০০০ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।

২০১৩ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এবং বর্তমান বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভোলা সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীতকরণের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

কিন্তু ৫০ শয্যার হাসপাতালের জন্য যে জনবল প্রয়োজন তাও দেওয়া হয়নি। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারনে রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে ভোলার সিভিল সার্জন ডা: ফরিদ আহমেদ বলেন, ডাক্তার সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবুও চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করছে।

সদর হাসপাতালে চিকিৎসক পদায়ন চেয়ে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের নিকট চিঠি প্রেরন করেছি, তারা খুব শিগ্রই আমাদের চিকিৎসক দিবেন বলে আস্বস্ত করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই