ভ্যাট ফাঁকিতে ‘প্রশিক্ষিত’ ম্যানেজার রেখেছে কেজেড

সরকারের টাকা নিজেদের পকেটে গুঁজে রাখার নানা কৌশল ইতোমধ্যেই নস্যাৎ করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের অভিযান চলে স্বনামধন্য কেজেড ফ্যাশন অ্যান্ড জুয়েলারির তিন শাখায়। এ অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দাদের যে অদ্ভুত ‘অভিজ্ঞতা’ হয়েছে তা এযাবৎকালের সকল ঘটনাকে হার মানায়।

প্রতিষ্ঠানটি একদিকে সরকারের ভ্যাটের টাকা ফাঁকি দিচ্ছে অন্যদিকে ভ্যাটের টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকাতে ‘প্রশিক্ষিত’ কর্মচারী ও ম্যানেজার রেখেছে।

গতকাল রাতে ‘ভ্যাট ইন্টেলিজেন্স’এর ফেসবুক পেইজে অভিযানটি সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছে গোয়েন্দারা। অনলাইনে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পেয়ে চকবাজার, নিউমার্কেট ও গ্রিনরোডের শাখায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ভ্যাট ফাঁকিসহ কেজেড-এর কার্যক্রমে কয়েকটি অসঙ্গতি চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দারা।

kz20160812200645

অভিযানে কেজেড-এর ৭টি কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। কেজেড-এর শাখাগুলোর অসঙ্গতি হচ্ছে

kz320160812200504

১. কয়েকটি শাখায় (ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার) ইসিআর থাকলেও কোনটিতেই ইসিআর চালান ইস্যু করেন না। ইসিআর রেখে নিজেদের রশিদ ব্যবহার করে।
২. নিজস্ব রশিদে ইচ্ছেমতো ভ্যাট ধরে, কিন্তু সরকার পায় না।
৩. তাদের প্রধান শাখাসহ বেশিরভাগ শাখার ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) নেই।
৪. মোট বিক্রয় আলাদা করে রেকর্ড করেন না।
৫. প্রতিদিনের বিক্রি লুকিয়ে ফেলে।
৬. ভ্যাট ফাঁকির জন্য কেজেড প্রশিক্ষিত কর্মচারী, ম্যানেজার রেখেছে। যারা বরাবর গোয়েন্দাদের নানাভাবে উত্যক্ত করেছে, তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হুমকি দিয়েছে।
৭. কোনো কোনো শাখায় হিসেবের চেয়ে কম পরিমাণে ভ্যাট দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
৮. অনেক শাখায় ইসিআর মেশিন নেই।
৯. মূসক নিবন্ধন সনদ (মূসক ৮) দৃশ্যমান স্থানে রাখে না।

কেজেড-এর প্রতারণার বিষয়ে ভ্যাট গোয়েন্দারা জানায়, গোয়েন্দারা বিক্রির হিসেব চাইলে তারা প্রথমে সার্ভার থেকে গত তিন মাসের তথ্য প্রিন্ট করে দেয়। এসময় হঠাৎ সার্ভার বন্ধ হয়ে যায়। কোন তথ্য আসছিল না। প্রিন্ট হচ্ছিল না। নানান টালবাহানা।

কেজেড এ অভিযানের বিষয়ে ফেসবুক পোস্টে ভ্যাট ইন্টেলিজেন্স জানায়, চুরিতো চুরি আবার সিনাচুরি। আজকের KZ Fashion & Jewellery অভিযানে এমন বৈরী অভিজ্ঞতা ভ্যাট গোয়েন্দা টিমের। ওদের ম্যানেজার শাহীন অফিসারদের হুমকি দিয়েছে, দুর্ব্যবহার করেছে। টিমকে নানা কৌশলে উত্যক্ত করেছে। ফাঁদে ফেলতে চেয়েছে। ভুল করাতে চেয়েছে। অনেককে টেলিফোন করেছে, করিয়েছে। পিছু হটেনি গোয়েন্দারা।

৩০ জনের ভ্যাট গোয়েন্দা দল ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে অভিযানে অংশ নেয়। প্রতিটি টিমের নেতৃত্বে ছিলেন একজন সহকারী পরিচালক (এডি)।



মন্তব্য চালু নেই