মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ রাখবে সকালের এই অভ্যাসগুলো

সারাদিনে হাজারো কাজের চাপ নেয় আমাদের মস্তিষ্ক। অফিসের কাজ তো বটেই, সাথে থাকে পড়াশোনা, ঘরের কাজ, পরিবারের চিন্তা। নানান রকমের স্ট্রেসে থাকতে থাকতে কখন যেন ভোঁতা হয়ে যায় আমাদের মস্তিষ্ক। বয়সের প্রভাবটাও আছে বই কী। কিন্তু এতসব প্রতিকূলতার মাঝেও আপনার মস্তিষ্ককে তরুণ রাখতে পারে কিছু অভ্যাস। এসব অভ্যাস আসলে মানসিক ব্যায়াম বলেই ধরা যায়। সকাল বেলায় যখন মস্তিষ্ক থাকে রিল্যাক্স, তখনই বেশি কার্যকরী এসব ব্যায়াম। সকালের আর দশটা অভ্যাসের সাথে যোগ করে নিন মস্তিষ্কের একটি ব্যায়াম। তাতে শরীরের পাশপাশি আপনার মনেও বিরাজ করবে তারুণ্য।

১) ভালোলাগার কাজটি করুন
কাজ, পরিবার, বিভিন্ন দায়িত্বের ভিড়ে আমরা নিজেকে সময় দিতেই ভুলে যাই। কেউ হয়তো রান্না করতে ভালোবাসেন, কেউ ভালোবাসেন ছবি আঁকতে, গান গাইতে। এসব কাজ থেকে দিনের পর দিন দূরে থাকতে থাকতে আমাদের মন ভরে ওঠে স্ট্রেসে। ফলে সহজেই আমরা মনোযোগ হারাই, ছুটে যায় মেজাজের লাগাম। সকালে নিজের ভালোলাগার কাজ করতে পারেন। এতে মস্তিষ্ক অনেকটা রিল্যাক্স হবে, ফুরফুরে থাকবে মেজাজ। এতে সারাদিনের কাজ ঠিকমতো করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

২) পড়ুন কয়েক ছত্র
দ্রুতগতির এই জীবনে গ্যাজেটের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে দুই লাইন লেখা পড়েছেন শেষ কবে, মনে পড়ে? কিন্তু বই পড়া এমন একটি কাজ যা আমাদের মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করতে সক্ষম। পড়তে পারেন গদ্য অথবা পদ্য, এমনকি দৈনিক পত্রিক অথবা অনলাইন আর্টিকেল পড়াটাও উপকারে আসতে পারে।

৩) শরীরচর্চা
আমাদের স্বাস্থ্য এবং মেজাজ উভয়েরই উন্নতি করতে পারে শরীরচর্চা। পাশাপাশি এটা মস্তিষ্কের ওপরে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্টের মতো উপকারি ভূমিকা রাখে। বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্কের ক্লান্তি কমাতেও কাজ করে ব্যায়াম। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বিবেচনা ও স্মৃতিশক্তি প্রখর থাকে।

৪) মেডিটেশন
মেডিটেশন বা ধ্যানের ধারণা অনেক পুরনো। কিন্তু আমাদের শরীর, মন এবং জীবনের ওপর যে এর অনেক সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব আছে তা গবেষকেরা জানতে পারছেন বর্তমানে এসেই। বিশেষত মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অঞ্চলের উন্নতি করতে পারে ধ্যান। এছাড়াও যারা নিয়মিত মেডিটেশন করেন তাদের স্মৃতি বেশি দ্রুত কাজ করে। অনেক তথ্যের মাঝ থেকে দরকারি তথ্য খুঁজে বের করতে তারা হন বেশি পারদর্শী। সকালের ধ্যানের পর দিনের বাকি সময়টা মস্তিষ্ক থাকবে ফুরফুরে।

৫) ধ্রুপদী সঙ্গীত
সব সঙ্গীত মস্তিষ্কের জন্য উপকারী নয় বটে। সাধারণ ধীরস্থির লয়ের, মিষ্টি সুরের ক্লাসিক্যাল মিউজিক মস্তিষ্ককে শান্ত করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে মোজার্ট এবং বিটোফেনের সঙ্গীত মস্তিষ্কের জন্য উপকারী এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে বলে ধরা হয়। কাজে সময়ে গান শোনাটাও কিছু অংশে কাজের জন্য উপকারী।

৬) যুক্তিভিত্তিক খেলায় অংশ নিন
জীবনের একটা সময় পর্যন্ত আমরা পড়াশোনা করি, এতে আমাদের মস্তিষ্ক ধারালো থাকে। কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে দিলেই দেখা যায় বুদ্ধির সেই ধার চলে যায়। এতে আপনার কাজে আসতে পারে বিভিন্ন ব্রেইন বুস্টার ধরণের খেলা। এর মাঝে আছে ক্রসওয়ার্ড পাজল, ছোট ছোট কুইজ, সুডোকু ধরণের খেলাগুলো। এগুলো মস্তিষ্ককে ভোঁতা হওয়া থেকে বিরত রাখবে। এমনকি মস্তিষ্ককে গৎবাঁধা ছক থেকে বের করে আনে এমন কিছু কাজও করতে পারেন।

৭) গ্র্যাটিচিউড লিস্ট
এই ধারনাটা আমাদের অনেকের কাছেই নতুন মনে হতে পারে। ব্যাপারটা এমন- আপনার জীবনের ব্যাপারে চিন্তা করুন। আপনার জীবনে এমন অনেক কিছুই আছে যা আপনার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এই জিনিসগুলোর একটি তালিকা করুন। এটাই গ্র্যাটিচিউড লিস্ট। জীবনের ভালো ব্যাপারগুলোর দিকে মনোযোগ দিলে আমাদের মস্তিষ্ক ভালো কাজ করে বলে দেখা গেছে।

৮) ঘুম
এটা তো সবাই জানি, তাই না? কিন্তু জানলেও মেনে চলি কয়জন? দৈনিক অন্তত সাত ঘন্টা ঘুম আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্ক দুইয়ের জন্যই খুব জরুরী। আর রাতে এই ঘুমের মানটা যতো ভালো হবে, সকালে আপনার মস্তিষ্ক তত ভালো থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই