মাগুরার বৃদ্ধ শিশু বায়েজিদ এখন ঢামেকে

মাত্র চার বছরের বয়সে বার্ধক্যে নুয়ে পড়া মাগুরার শিশু বায়েজিদ সিকদারকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। আজ শনিবার (০৬ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে তাকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান, প্রফেসর ডা. আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চত করে জানিয়েছেন, ভর্তির পরপরই তার শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শিশু বায়েজদের শারীরিক গঠন দেখে অনেকে ধারণা করবে তার বয়স অনেক বেশি। কিন্তু তার বয়স মাত্র চার বছর। এরইমধ্যে সে বৃদ্ধ শিশু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো দ্রুত একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন

করে তার শারীরিক সমস্যা নির্ণয়ের। এরপর জানবো তার প্রকৃত রোগটি কি।’

মাগুরার মহাম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামের লাভলু সিকদারের ছেলে বায়েজিদের জন্ম ২০১২ সালের ১৪ই মে। সে হিশেবে তার বয়স চার বছরের কিছু বেশি। কিন্তু বায়জিদ সিকদারের দিকে তাকালে চমকে উঠবেন যে কেউ। তার চার বছরের ছোট্ট দেহটার ওপর কেউ যেন বসিয়ে দিয়েছে আশি বছরের বৃদ্ধের মুখ। চাহনি, অঙ্গভঙ্গিও অনেকটা বৃদ্ধ মানুষের মতো। শরীর এর মধ্যেই কুঁজো হয়ে গেছে। ঝুলে পড়েছে শরীরের চামড়া।

ডাক্তারদের ধারণা, অত্যন্ত বিরল এবং জটিল কোনো জেনেটিক রোগে আক্রান্ত বায়জিদ। এ ধরনের বিরল ‘জেনেটিক ডিজঅর্ডারে’ আক্রান্ত আরও একশ’র বেশি শিশু আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ডাক্তারি ভাষায় এর নাম ‘প্রোজেরিয়া’ বা ‘হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিনড্রোম’।

মূলত এই রোগে আক্রান্তরা দ্রুত বুড়িয়ে যেতে থাকে, স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ছয়গুন দ্রুত হারে। বায়জিদ শিকদার ঠিক প্রোজেরিয়াতেই আক্রান্ত কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত করেননি চিকিৎসকরা। তবে বায়জিদের সমস্ত লক্ষণই মিলে যায় প্রোজেরিয়ার যে লক্ষণ তার সঙ্গে।

বায়েজিদের অস্বাভাবিক শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানাজানি হওয়ার পর বিভিন্ন জনের পরামর্শে কয়েকদিন আগে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা মা। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢামেকে স্থানান্তর করেন।



মন্তব্য চালু নেই