মাত্র এই একটি পাঁঠা ছাগলের আতঙ্কে কাঁপছে পুরো এলাকাবাসী!

বেটা সো যা! নেহি তো গব্বর আ যায়ে গা! ‘শোলে’র এই গব্বরের ভয়ে রামগড়ে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে পানি খেত৷ বাড়ির বেয়াড়া বাচ্চাকে শান্ত করতে ওই একটা নামই যথেষ্ট ছিল৷ একই ছবি নলহাটির ভদ্রপুরেও৷ গব্বরের নামে কাঁপছে গোটা এলাকা৷ স্কুল যাওয়া বন্ধ করে ঘরবন্দি বাড়ির শিশুরা৷ কোনওভাবেই তাকে বশে আনতে না পেরে শেষমেশ বিচারসভা ডেকেছে স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত৷ আগামী ২৮ জুলাই ঠিক হবে গব্বরের ভবিষ্যৎ৷

তবে এ গব্বর কোনও ডাকু সর্দার নয়৷ পাঁঠা ছাগল! এই পাঁঠার ডাকুগিরিতেই ত্রস্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার নলহাটি দুই ব্লকের ভদ্রপুর৷ যাকে পাচ্ছে, শিং দিয়ে গুঁতিয়ে দিচ্ছে সে৷ তাড়া করে নিয়ে ফেলছে মাঝপুকুরে৷ ইতিমধ্যেই সে গুঁতিয়ে জখম করেছে শতাধিক মানুষকে৷ কয়েকজন এখনও হাসপাতালের বেডে শুয়ে৷

কোথা থেকে এল এই গববর? স্থানীয় এক মন্দিরের পূজারি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, গব্বর তখন অনেক ছোট৷ কোনও এক ভক্ত তাকে রেখে গিয়েছিল এই মন্দিরে৷ ধীরে ধীরে বয়স বেড়েছে৷ বেড়েছে বেয়াড়াপনাও৷ এলাকার মানুষই নাম দেয় গব্বর৷ প্রথম প্রথম বেঁধে রেখে জব্দ করা হত তাকে৷ কিন্তু পরে তার কাছে হার মেনেছে সকলে৷

বারবার দড়ি ছিঁড়ে ছুট লাগায় সে৷ তাকে কাবু করা এক কথায় অসম্ভব৷ তামাটে সাদা গায়ের লোম৷ কপালে সিঁদুরের তিলক৷ ধারে কাছে ঘেঁষলেই গা গুলিয়ে ওঠে বোঁটকা গন্ধে৷ তার দাপটেই দিশেহারা ভদ্রপুরবাসী অবশেষে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন৷ ভদ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা রায় আগামী ২৮ জুলাই এক বৈঠক ডেকেছেন৷ তার আগে পর্যন্ত ভদ্রপুরের বাঁধা পাকুড় তলায় বাঁধা থাকবে দাপুটে পাঁঠাটি৷

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত রবিবারই ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এলাকার গোবিন্দ রায়৷ বয়স ৫০ ছুঁয়েছে৷ ধীরে ধীরে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন৷ হঠাৎ পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা৷ কিছু বোঝার আগেই মুখ থুবড়ে পড়লেন৷ কোনও মতে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে নিয়ে গেল ডাক্তারখানায়৷ থুতনিতে চারটে সেলাই৷ সৌজন্যে গব্বর৷ ১৫ দিন ধরে ঘরের বিছানায় পড়ে রয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব মদনকুমার রায়৷ কাঠগড়ায় সেই গব্বর৷ গ্রামের সন্ধ্যা মণ্ডল, সরস্বতী দত্তরা গব্বরের নাম শুনলেই মেজাজ চড়াচ্ছেন সপ্তমে৷ তারা যে ভুক্তভোগী!

গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান শম্পা রায় বলেন, “এই পাঁঠাকে নিয়ে অনেক অভিযোগ৷ তাই ২৮ তারিখের সভায় গব্বরের বিরু‌দ্ধে অভিযোগগুলি এজেন্ডায় রেখেছি৷” বিভাগীয় বন আধিকারিক কল্যাণ রাইয়ের কথায়, “আমরা তো কিছু করতে পারি না৷ পাঁঠা তো গৃহপালিত পশু৷ বন্য নয়৷ তাই আমাদের এক্তিয়ারও নেই৷”

তবে নলহাটি-২ ব্লকের বিডিও ঋক সপ্তাশ্ব বলেন, “গব্বরকে নিয়ে ব্লক লাইভ স্টক ডেভলপমেন্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে হবে৷” অন্যদিকে প্রাণীবিকাশ দফতরের উপ অধিকর্তা বাসুদেব মাইতি বলেন, অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ কিন্তু তত দিনে গব্বর কোনও নয়া খেল না দেখিয়ে বসে! আতঙ্কে ভদ্রপুরবাসী! সংবাদ প্রতিদিন



মন্তব্য চালু নেই