মাত্র ১ মিনিটে ঝেড়ে ফেলুন স্ট্রেস

স্ট্রেস বা মানসিক চাপের শিকার হই আমরা প্রতিদিন। কাজের চাপ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, আর্থিক প্রয়োজন, নিত্যদিনের নানা ঝঞ্ঝাট আমাদের মস্তিষ্ককে মাঝে মাঝে যেন অকেজো করে দেয়। আমরা তখন কিছুই ভাবতে পারি না। প্রচন্ড রেগে যাই, প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বসি অথবা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। স্ট্রেস থাকবেই, কিন্তু একে মোকাবেলা করার অস্ত্রও আমাদেরই হাতে। আসুন জেনে নিই, মাত্র ১ মিনিটে বা তারও কম সময়ে কিভাবে স্ট্রেস দূর করবেন।

১। ধীরে এবং গভীরে শ্বাস নিন
‘আপনি যখন স্ট্রেসড হন তখন অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ করেন, যা আরও স্ট্রেস তৈরি করে এবং আপনাকে আতঙ্কিত করে তোলে’, বলেন ডাঃ অমিত সুড। তিনি মিনেসোটার রোচেস্টারের মায়ো ক্লিনিক হেলদি লিভিবগ প্রোগ্রাম এর প্রফেসর এবং স্ট্রেস এক্সপার্ট। তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ধীর এবং গভীর শ্বাস অ্যাড্রেনালিন লেভেল কমায়, ফলে গভীর শ্বাস নিলে স্ট্রেস কমে যায়’।

২। ডার্ক চকোলেট
চকোলেটে থাকে ফ্লেভোনয়েড যা মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরন করে। এতে প্রয়োজনীয় সব প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স জাগ্রত হয়। ডাঃ সুড এর মতে, কোকো ক্যামিক্যাল আছে এমন অন্য যে কোন খাবারও আপনার কাজে আসতে পারে। স্ট্রেসে থাকা মস্তিষ্ককে ১ মিনিটে ঝরঝরে করে দেবে এক টুকরো ডার্ক চকোলেট। সব সময় সাথে রাখতে পারেন এটি।

৩। ডুডল
গবেষণা বলে, সৃজনশীলতা মস্তিষ্ককে ঝরঝরে করে। আপনি যখন প্রচন্ড স্ট্রেসে জর্জরিত, কাজের ফাইলগুলো সব এক পাশে সরিয়ে রাখুন। একটা কাগজ নিন আর আঁকুন যা খুশী। মনোযোগ সরে যাবে, রিল্যাক্স অনুভব করবেন কয়েক সেকেন্ডেই।

৪। যা হচ্ছে ভাল হচ্ছে
নিজেকে নিজে শান্ত করার চেষ্টা করুন। হঠাৎ একটা দুঃসংবাদ পেলেন, কিন্তু সেটি বদলাতে আপনার কিছুই করার নেই। তাহলে অযথা উত্তেজিত হয়ে কেন নিজেকে কষ্ট দেবেন? বরং ভাল কোন খবরের কথা মনে করুন। যে কাজটি হয় নি তার জন্য নিজেকে দোষারোপ না করে বরং একটু আগেই চমৎকার ভাবে শেষ করেছেন যে কাজটি তার কথা মনে করুন। নিজের প্রশংসা করুন।

৫। ইউটিউব
নিজেকে রিল্যাক্স করতে চট করে ঘুরে আসতে পারেন ইউটিউবে। হাসির কোন ভিডিও দেখতে পারেন। মস্তিষ্ককে তরতাজা করতে কমেডি খুবই কার্যকর। চার্লি চ্যাপলিনের সিনেমার ভিডিও ক্লিপ দেখুন। ৬০ সেকেন্ড লাগবে মন ভাল হতে।

৬। ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার
যেকোন ধরণের খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে, সাথে থাকে সুগার তা মস্তিষ্ককে ঝটপট রিচার্জ করে। আর এসব খাবারে প্রচুর ক্যালরি থাকে, ফলে তাৎক্ষণিক এনার্জিও পাওয়া যায়। তাই অতিরিক্ত স্ট্রেস বোধ করলে অর্ডার করে ফেলুন একটা বার্গার অথবা পছন্দের পিজ্জা। দই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আইসক্রিমও খেতে পারেন। সবসময় সাথে রাখতে পারেন আখরোট, বাদাম, পনির।

৭। প্রিয়জনকে ফোন করুন
আপনার মা বা প্রিয় কারও সাথে কোথা বলা আপনার মস্তিষ্ককে প্রশান্ত করতে পারে সহজেই। যখনই মনে হচ্ছে, আপনি আর স্ট্রেস নিতে পারছেন না বা আপনার আর কাজ করার ক্ষমতা নেই তখনি থামুন। ব্রেক নিন। কল করুন এমন প্রিয় কাউকে যার কন্ঠস্বর শুনলেই শান্তি বোধ করেন আপনি।

৮। ধন্যবাদ বলুন
কাউকে ধন্যবাদ বলতে চাইছিলেন? তাকে খুব সুন্দর করে ধন্যবাদ লিখে পাঠান। একটা অনন্য উপায় ভাবুন, কিভাবে ধন্যবাদ বলবেন। আপনি যখন ভীষণ ভাবে মানসিক চাপে আছেন তখন এমন কিছু করা যা তাৎক্ষণিক ভাবে আপনাকে আনন্দিত করবে সেটা খুবই জরুরী হলেও কঠিন। সচেতনভাবে নিজের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারেন। করে ফেলুন ‘ধন্যবাদ’ বলার এই না করা কাজটি।

৯। চা/কফি
মন ভাল করতে চা বা কফি কিন্তু দারুণ কার্যকরি। এজন্য অফিসগুলোতে দেখা যায়, চা এর ব্যবস্থা রাখা হয়, যাতে কর্মীরা কিছু সময় রিল্যাক্স থাকতে পারে। চা কফিতে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে।

১০। মিউজিক
স্ট্রেস কমাতে একটা ভাল গান, একটা ভাল সুর এমনকি শুধু বাদ্যযন্ত্রের মূর্ছনা চমৎকার কাজে দিতে পারে। আপনার প্রিয় কোন গান শুনুন চোখ বন্ধ করে। মনকে ভাসিয়ে দিন সুরের সাথে। ভুলে যান আপনি কোথায় আছেন! ফিরে আসুন মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই একজন ঝরঝরে ফুরফুরে মানুষ হয়ে যে তৈরি যে কোন কাজের জন্য।



মন্তব্য চালু নেই