মাথার চুল তাড়াতাড়ি বড় হলেও গায়ের লোম দ্রুত বাড়ে না কেন?

মানুষের চুল তাড়াতাড়ি বাড়ছে শুধু তাই নয় বরং যদি মাসে মাসে চুল না কাঁটা হয় তাহলে চুল বড়ই হতে থাকে। কিন্তু গায়ের লোম কিন্তু একটা নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত বেড়ে আর বাড়ে না। ঠিক তেমনি চোখের পাপড়িও কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ( যদি আমাদের গায়ের লোম এবং চোখের পাপড়ি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত না বেড়ে শুধু বড়ই হতে থাকত তাহলে ব্যাপারটা কেমন হত?) আবার ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মাথার চুল গজানোর হার বেশী । ছেলেদের মুখে দাড়ি হয় কিন্ত মেয়েদের মুখে দাড়ি হয় না, কেন? একই ভাবে, আমরা একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত লম্বা হই। এরপর থেমে যাই তা কেন হয়? বস্তুত আমাদের দেহের প্রতিটা কোষগুচ্ছই (অর্থাৎ কলা, অঙ্গ) একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা অর্জন করার পরে থেমে যায়, এর কারণ কি?

আবার আমাদের যেমন মাথায় চুল বড় হয় তেমনি ঘোড়ার ঘাড়ে চুল বড় হয়। ঘোড়ার দেহের পশম কিন্তু বড় হয় না। আবার গৃহপালিত জীব মেষ, ভেড়া এগুলোর গায়ের লোম বড় হয়। কিন্তু গরুর গায়ের লোম কিন্তু আবার এরকম বড় হয় না।

এটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে সেল টাইমিং। সেল টাইমিং অনেক ধরনের প্রভাবক (যেমন: হরমোন) দিয়ে প্রভাবিত হতে পারে। টাইমিং কিভাবে হয় তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। তবে সহজ ভাবে বলতে গেলে সেল টাইমিং বিষয়টি আমাদের জিনোমে ডিজাইন করা আছে। ‘এপিজেনেটিক্স’ নাম সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক শাখাটি এ বিষয়গুলোই কাজে করে। অর্থাৎ এদের কাজের বিষয়বস্তু হচ্ছে, যে কিভাবে ‘ডিএনএ-র এক্সপ্রেসন’ এর সময়, মাত্রা. ধরণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়।

কিন্তু যে জিনগুলো দিয়ে আমাদের চুলের বৃদ্ধি হওয়া নিয়ন্ত্রিত হয় সেগুলোতে যদি মিউটেশন হয় তাহলে কি হবে? চুল হয় তৈরীই হবে না, অথবা অস্বাভাবিক গঠনের চুল তৈরী হবে। মিউটেশন যেমন আমাদের চুলকে খারাপ ভাবে প্রভাবিত করে তেমনি শিম্পাঞ্জি জাতীয় প্রাইমেটগুলোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে। সুতরাং এপের গায়ের লোমে মিউটেশন হলে এপের গায়ের লোম অস্বাভাবিক হতে পারে কিন্ত সেটার মধ্য বিবর্তিত হয়ে মানুষ আসার (বা মানুষের লোম আসার) কোন সম্ভাবনা নেই।



মন্তব্য চালু নেই