মানসিক চাপে সন্তানধারণের ক্ষমতা হ্রাস

বাচ্চার প্রতি অগাধ টান থাকা সত্বেও অনেক দম্পতিই বাচ্চা নিতে সক্ষম হন না। কয়েক বছর ধরে চেষ্টার পরও ইচ্ছা পূরণে বাকি থেকে যায়। এর পেছনে থাকা কারণটি খুঁজেও পান না তারা। সম্প্রতি একটি গবেষণায় বলা হয়, সন্তানধারণের অক্ষমতার পেছনে নারীর মানসিক চাপ বা উদ্বেগ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।গবেষণাটি করেছেন লস-অ্যাঞ্জেলস এর সিনা মেডিকেল সেন্টারের কো অরডিনেটর মার্গারেট ডি পিসারস্কার সহ এক দল গবেষক।

গবেষকদের মতে, নারীর এই অনুর্বরতার জন্য উদ্বেগ অনেকটাই দায়ী। আলফা এমাইলেজ এনজাইম হয় চাপের চাপের কারণে। এই বিষয়টি দেরিতে সন্তান ধারণ করার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

গবেষকরা আরও বলেন, যেসব নারী সাধারণত চাপের মধ্যে থাকেন, বেশির ভাগ সময়ই ক্লান্তবোধ করেন, কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন বা উদ্বিগ্ন হন, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করেন না এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চলেন না, তাদের সন্তান ধারণক্ষমতা স্বাভাবিক নারীর তুলনায় অনেক কম হয়।

গবেষণাটি করা হয় ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৭৪ স্বাস্থ্যবান নারীর ওপর। তারা সন্তান নিতে চেষ্টা করছেন। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, দুই ধরনের কেমিক্যালের নিঃসরণ গর্ভধারণকে প্রভাবিত করে। এগুলো হলো সালিভা এবং আলফা এমাইলেজ, যা মানসিক চাপের কারণে নিঃসরিত হয়। তবে এর সঙ্গে চাপ তৈরিকারী হরমোন করটিসলের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। জরিপে অংশ নেওয়া ১২ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে অতিরিক্ত চাপ গর্ভধারণের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সন্তান না হওয়া কখনো কখনো শক্তিহীনতার অনুভূতি তৈরি করে, যা ব্যক্তির মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

তাই গবেষকদের পরামর্শ, অধিকাংশ লোকই বুঝতে পারেন না চাপের কারণে তারা গর্ভধারণ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই রকম সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সন্তান নেয়ার কয়েক মাস আগে থেকে পরিকল্পনা শুরু করুন এবং এই সময়টায় চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। চাপমুক্ত থাকতে ম্যাসাজ, ইয়োগা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। সঙ্গীকে বুঝিয়ে এই সময়টায় স্বাভাবিক থাকতে চেষ্টা করুন।

গবেষকরা আরও বলেন, অনেক দম্পতিই রয়েছেন, যারা একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলুন। ধীরে ধীরে চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। এই চিন্তামুক্ত থাকার অভ্যাসই আপনাকে সন্তানধারণে সাহায্য করবে।



মন্তব্য চালু নেই