মাশরাফির ‘ডাবল’ সেঞ্চুরি

মাশরাফি মানেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্যের সবচেয়ে বিজ্ঞাপন। দলীয় খেলাটাকে কিভাবে একান্তই ‘দলীয়’ রূপ দান করে সাফল্য এনে দিতে পারেন মাশরাফি, সেটা যেন তিনি ছাড়া আর কেউ জানেন না। মাশরাফি এমনই। তো এমন এক নেতাই কি না আজ স্পর্শ করে ফেললেন অন্যরকম এক ‘ডাবল’ সেঞ্চুরির মাইলফলক।

না, ব্যাট হাতে নয়, বল হাতে। বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মাশরাফি আজ ছুঁয়ে ফেললেন ২০০তম উইকেটের মাইলফলক। জিম্বাবুয়ের দুইজন ব্যাটসম্যানের প্রাণ সংহার করে মাশরাফি এখন অবস্থান করছেন ২০১ উইকেটের চুড়ায়।

মুস্তাফিজ আর আরাফাত সানিকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছেন। এরপর সাকিব, আল আমিনদের আনলেন আক্রমণে। তবুও মাশরাফি আসছিলেন না বল হাতে আক্রমণ শানাতে। সমর্থকদের মনে তখন উৎকণ্ঠা দেখা দিল। তবে কি মাশরাফি বল করবেন না!

মাত্রই তো কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু হলো। ডেঙ্গু সেরে উঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজ খেলা হবে কি না সেটা নিয়েই সংশয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু অদম্য মাশরাফি কি এত সহজে হার মানেন! মানলেন না বলেই দলকে নেতৃত্ব দিতে এলেন এবং আজও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন।

২২তম ওভারে আসলেন বল করতে। প্রথম দুই ওভার থাকলেন উইকেটশূন্য। নিজের তৃতীয় ওভারেই ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে তুলে নিলেন। সে সঙ্গে হয়ে গেলেন বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় বোলার হিসেবে ২০০তম উইকেট শিকারি।

রাজার আউটটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ ছিল। তবে, সেটা হয়তো বা শুধুই জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের মনে। টিভি রিপ্লেতে অন্তত দেখা গেছে, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বলটা মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়েছে। আউটের আবেদন করার পরই আঙ্গুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে ফেললেন ‘দ্য নড়াইল এক্সপ্রেস।’ ওয়ানডেতে ২০০ উইকেটের মালিক হয়ে গেলেন তিনি।

মাশরাফির আগে দুই বাম হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ও সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের হয়ে ২০০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। এবার তৃতীয় বোলার হিসেবে এই তালিকায় যোগ হলেন মাশরাফি। আর পেসার হিসেবে তো প্রথমই!

মাশরাফির নামের পাশে ২০০ উইকেট আগেও ছিল। তবে সেটা দেশের হয়ে নয়। ২০০৭ সালে এশিয়ান একাদশের হয়ে আফ্রিকার বিপক্ষে একটি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ওই উইকেটটাই আন্তর্জাতিক উইকেট হিসেবে তার নামের পাশে উজ্জ্বল হয়েছিল।

কিন্তু মাশরাফি তো আর দেশের বাইরে কিছু ভাবতে পারেন না। এ কারণে দেশের হয়েই ২০০তম উইকেট তুলে নিতে চাইলেন। সেটা সিকান্দার রাজাকে দিয়েই পূরণ করে নিলেন তিনি। এরপর অবশ্য ম্যালকম ওয়ালারের উইকেট নিয়ে নিজের নামের পাশে সংখ্যাটা আরও বাড়িয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক হিসেবে মাশরাফির উইকেট এখন ২০২টি। আর দেশের হয়ে ২০১টি।

বল হাতে ৬ ওভাওে মাত্র ১৩ রান দিয়ে দারুন অবদান রেখেছেন তিনি। ব্যাট হাতেও ছিলেন দারুন সফল। শেষ দিকে ৮ বলে ১৪ রান করে বাংলাদেশের সংগ্রহকে তিনি নিয়ে গেলেন ২৭৩ রানের চ্যালেঞ্জে।



মন্তব্য চালু নেই