মিতুর মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠাল কে?

চট্টগ্রামে পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার দু’দিন পার হলেও শনাক্ত করা যায়নি খুনিদের। উদ্ধার করা যায়নি নিহত মাহমুদা খানম মিতুর মোবাইল ফোনটিও। এ ফোনেই খুনিরা ভুয়া এসএমএস পাঠিয়ে মিতুকে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘর থেকে বের করে এনেছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। নিহত মিতুর মোবাইলটি উদ্ধার করতে না পারায় অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা তদন্তকারীদের কাছে। তবে এসএমএসের বিষয় প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল বলেন, পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুর মোবাইলে বাচ্চাকে খুব সকাল বেলায় স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে এসএমএস পাঠানোর কথা বলা হয়েছে সেই ধরনের এসএমএস পাঠানো হয়নি প্রতিষ্ঠান থেকে।

কেবল তাই নয়, নিয়ম অনুযায়ী ওই ধরনের এসএমএস পাঠানোর আগে কলেজটিতে ৩টি ধাপে তা অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওইদিনের অনুষ্ঠানের জন্য এই ধরনের কোনো এসএমএস পাঠানো হয়নি তার মোবাইলে। তবে পূর্ব নির্ধারিত এই অনুষ্ঠানের জন্য বৃহস্পতিবার বাবুল আকতারের ছেলেসহ অন্য বাচ্চাদের ক্লাসেই তা জানিয়ে দেয়া হয়। এই বিষয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল আবু নাসের মো. তোহা বলেন, এই ধরনের কোনো এসএমএস আমাদের এখান থেকে যায়নি। তিনি বলেছেন, নিহত পুলিশ সুপারের স্ত্রী রাতে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে আগের রাতে এসএমএস পেয়ে ঘটনার দিন খুব সকাল বেলায় বাচ্চাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। ওই এসএমএসে লেখা ছিল ৭টা ২০ মিনিটে অ্যাসেম্বলি।

মোবাইল ফোনটিতে গত শনিবার রাতে মিতুর ছেলে মাহিরের স্কুল থেকে এসএমএস দেওয়া হয়। প্রতিবেশী কয়েকজন নারী জানান, মিতু শনিবার রাতে তাদের সঙ্গে আলাপের সময় বলেছিলেন, স্কুল থেকে এসএমএস দিয়েছে, রোববার স্কুলে সমাবেশ আছে, তাই স্কুলবাস তাড়াতাড়ি আসবে। তবে এ ব্যাপারে মাহিরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ কর্নেল আবু নাসের মো. তোহা জানান, স্কুল থেকে কোনো এসএমএস পাঠানো হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘মোবাইল পাওয়া গেলে হয়তো ব্যাপারটি জানা যাবে।’ চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে বাবুল আক্তার জঙ্গি দমন অভিযানে সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত হয়েছিলেন। তবে বিভিন্নভাবে হুমকি আসতে থাকায় উদ্বিগ্ন ছিলেন তারা। ওআর নিজাম রোডের ওই বাসা বদলে ফেলার ইচ্ছার কথাও এক প্রতিবেশীকে বলেছিলেন মিতু। গত রোববার সকালে নগরীর ওআর নিজাম রোডের বাসা থেকে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে জিইসি মোড়ে যাওয়ার সময় খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। তাকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে জঙ্গি কায়দায় হত্যা করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই