মিতু হত্যা মামলা ডিবিতে স্থানান্তর

পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রোববার রাত ১০টার দিকে পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ত্রিরতন বড়ুয়া বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন, যাতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (৬ জুন) দুপুরে লোমহর্ষক এ হত্যার তদন্তভার পুলিশের ওই সংস্থাকে দেয়া হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য।

এদিকে, মাহমুদা আক্তার হত্যায় জড়িত সন্দেহে চার জন আটকের খবর বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া গেলেও পুলিশ কর্মকর্তারা তা স্বীকার করেননি।

রোববার (৫ জুন) সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে খুন করে দুর্বৃত্তরা।

মিতুকে খুনের পর হত্যাকারী তিনজন মোটরসাইকেলে করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। সিসিটিভি ফুটেজে তাদের পালাতে দেখা যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, মিতু হত্যাকাণ্ড হয়েছে মাত্র ৫০ সেকেন্ডে। আর মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাত্র ১৭ সেকেন্ড সময় নিয়েছে ঘাতকরা। মোটর সাইকেল নিয়ে আগেই দাঁড়িয়ে ছিল দুই হামলাকারী, অপরজন মিতুকে অনুসরণ করেছে পেছন থেকে।

জিইসি মোড়সংলগ্ন মিষ্টির দোকান ওয়েল ফুডের সামনে পৌঁছার সাথে সাথে মিতুকে প্রথমে ছুরি মারে এবং পরে মাথায় গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে ঘাতকরা। এ সময় মিতুর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল তার পাঁচ বছরের শিশুসন্তান।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, হত্যার ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা আগে থেকেই ঘটনাস্থল রেকি করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে বাসা থেকে বের হয়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে কখন আসবেন, তা নিশ্চয় দুর্বৃত্তরা আগে থেকেই খোঁজখবর রেখেছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী তাঁর ছেলে মাহমুদ আকতার মাহিরকে নিয়ে জিইসি মোড় পৌঁছার আগেই ওয়েল ফুড নামক দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে করে তিন আরোহী আসে। যে গাড়ি চালাচ্ছিল, তার মাথায় হেলমেট ছিল। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ছিল। মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছুরি ছিল। পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে একটি পিস্তল ছিল।’

রোববার রাত ৩টার দিকে নগরীর শুলকবহর বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘মোটরসাইকেলটির নম্বর চট্টমেট্রো-ল-১২-৯৮০৭। সেটি চট্টগ্রামের ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।’

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘পুলিশের মনোবল নষ্ট করতেই চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। যে অফিসারের স্ত্রী ওপর হামলা করা হয়েছে তিনি চৌকস অফিসার। জঙ্গি দমনে তার ভূমিকা ছিল। এ কারণে তিনি টার্গেটে ছিলেন। এটা একটি টার্গেট কিলিং।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুব দ্রুত ধরতে পারব।’



মন্তব্য চালু নেই