মিথ্যা যে তথ্যগুলো আপনি আজও বিশ্বাস করেন

এমন অনেক ভুল ধারণা আছে যা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত হওয়ায় সত্য বলে ধরে নিয়েছি আমরা। কিন্তু এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই হয়ত সত্য নয়। আমরা কখনো নিজের চোখে দেখিও নি এই ঘটনাগুলো বা আমাদের বন্ধুরা যারা সত্যি বলে বিশ্বাস করেন তারাও নিজেরা চাক্ষুষ সাক্ষী নয়। কিন্তু আমরা তবু বিশ্বাস করে চলেছি দিনের পর দিন। সাধারণ এমনই কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে জেনে নেব আজ।

চুইংগাম গিলে ফেললে পেটে রয়ে যায়
ছোটবেলা থেকে কতবার শুনেছি এই কথা, তাই না? হ্যা, চুইংগাম খুব ভাল খাবার নয়। হজমে একটু দেরিও হয়। কিন্তু তাই বলে হজম হবে না, তা নয়। বরং পাকস্থলীর স্বাভাবিক নিয়মেই হজম হয়ে যায় চুইংগাম। যেভাবে একটি পিজ্জা হজম করে ফেলেন আপনি, আস্ত একটি হ্যামবার্গার খেয়ে ফেলেন তেমনই হজম হয়ে যায় প্লাস্টিকের মতো হলেও গিলে ফেলা চুইংগামটি। এটি পাকস্থলীর প্রাকৃতিক হজম ব্যবস্থা।

গোল্ডফিসের স্মৃতি ৩ সেকেন্ডের
মানুষের গোল্ডফিশ সম্পর্কে অদ্ভুত এই ধারণা কেন তা কেউ জানে না। কিন্তু গোল্ডফিশ মোটেই এত বোকা প্রাণী নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গোল্ডফিশ ৩ মাস পর্যন্ত একটি বিষয় মনে রাখতে পারে। এমনকি প্রশিক্ষণ দিয়ে গোল্ড ফিশকে কঠিন কাজও করানো সম্ভব। পাখি বা অনেক স্তন্যপায়ীর মত বুদ্ধিমান প্রাণী গোল্ডফিশ।

গাজরে দেখার ক্ষমতা বাড়ে
আমরা বিশ্বাস করি, গাজর বিশেষ উপকারী দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর জন্য। কিন্তু বাস্তবে অন্য সব খাবারের মতোই গাজর উপকারী বটে, কিন্তু আলাদা করে চোখের আলো বাড়াতে কোন ভূমিকা রাখে না গাজর। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা এই মিথ্যা ছড়ায়। তার যুদ্ধে রাডার ব্যবহার করছিল, কিন্তু জার্মানরা যা সেটা না বুঝতে পারে তাই তারা প্রচার করে যে তাদের সৈনিকরা গাজর খায় বলে তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ ক্ষমতা এত ভাল। হাস্যকর হলেও সত্যি, এই মিথ্যা আমরা এখনো বিশ্বাস করি।

কেঁচো কাটলে দুইটা হয়ে যায়
কেঁচো মাঝখান থেকে কেটে ফেললে দুইটা কেঁচোতে পরিণত হয়, এমন ধরনা থাকে অনেকের। ভুল ধারণা। এমন ভয়ংকর কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসুন। কেঁচোকে কেটে ফেললে এর মাথার অংশটি আবার পূর্ণতা পাবে বটে। কিন্তু লেজের অংশটি অবশ্যই মারা যাবে। তবে planarian flatworms অবশ্য ক্ষুদ্রতম কাঠের ছিলকা থেকে একটি সমগ্র সত্তা বিকশিত করতে পারে।

উট তার কুঁজে পানি জমিয়ে রাখে
মরুভূমির জাহাজ এই উট দিনের পর দিন মরুভূমিতে থাকে এবং পানি ছাড়াই ৭ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে উট নিজের কুঁজে পানি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আর সেই পানি তাকে বাঁচিয়ে রাখে। এদের শরীরের লাল রক্তের কোষগুলো ওভাল আকৃতির, যা ডিহাইড্রেশন রোধ করে, কিডনি এবং অন্ত্রে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখে। এর কুঁজ উঁচু শুধু একটি শারীরিক বৈশিষ্ট হিসেবে আর কিছু নয়।

ষাঁড় লাল রঙ দেখলে ক্ষেপে যায়
কে আছি আমরা যে এটা বিশ্বাস করি না? সিনেমায় কতবার দেখেছি এই দৃশ্য যে, একটা লাল কাপড় দেখানো হল আর ক্ষেপে গেল ষাঁড়টা। আসলে ষাঁড় বর্ণান্ধ। রঙ সে দেখতেও পায় না, আলাদাও করতে পারে না। সব রঙ তার কাছে সমান। কিন্তু তাহলে সে কেন ক্ষেপে যায়? আসলে যেটা হয়, ষাঁড়ের সামনে ওভাবে কাপড় নাড়ালে সে মনে করে তাকে আক্রমণ করা হতে পারে। তাই সহজাত প্রতিক্রিয়ায় সে তেড়ে আসে। লালের জায়গায় নীল, হলুদ যে কোন রঙের কাপড় নেড়ে দেখতে পারেন!



মন্তব্য চালু নেই