মিনারহীন মসজিদ পাচ্ছে সেরা পুরস্কার

মুসলিম সম্প্রদায়ের কাজে লাগে এমন সব সেরা স্থাপত্যকে ‘আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’ দেয়া হয়৷ প্রথমবারের মতো এবার দুজন বাংলাদেশি স্থপতি এই পুরস্কার পেয়েছেন।

মিনার নেই
ঢাকার উত্তরায় বায়তুর রউফ মসজিদে কোনো মিনার নেই৷ এই মসজিদের নকশাই এবার আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার পাচ্ছে৷ ২০১২ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

পরিকল্পনায় নারী
নাম তাঁর মেরিনা তাবাসসুম৷ বয়স ৪৫৷ ২০০৫ সালে যখন এই মসজিদের নকশা করার দায়িত্ব পান৷ তার আগে খুব একটা মসজিদের ভেতরে যাওয়া হয়নি তাঁর৷ তাই বায়তুর রউফ মসজিদের নকশার কাজ শুরুর আগে প্রায় একশটি মসজিদ ঘোরেন তাবাসসুম।

সুলতানি স্থাপত্য
বায়তুর রউফ মসজিদের নকশায় রয়েছে সুলতানি স্থাপত্যের অনুপ্রেরণা৷ আটটি পিলারের ওপর নির্মিত এই মসজিদে আলো হাওয়া খেলার যে ব‌্যবস্থা স্থপতি রেখেছেন, তা আগা খান পুরস্কারের জুরি বোর্ডের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

আরেক বাংলাদেশির সাফল্য

তাবাসসুম ছাড়াও আরেক বাংলাদেশি এবার আগা খান পুরস্কার পাচ্ছেন৷ তিনি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী৷ মহাস্থানগড়ের আবহে তিনি গাইবান্ধার ‘ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার’এর নকশা করেছেন৷ এটি মূলত একটি এনজিও ট্রেনিং সেন্টার৷ স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি ইট, কাঠ আর পাথরের মিশেলে অনেকগুলো ব্লকে ভাগ করা এ স্থাপনায় সব ছপিয়ে নজর কাড়ে সবুজের সমারোহ।

বাংলাদেশি এই প্রথম
বিদেশিদের নকশায় গড়া বাংলাদেশের তিনটি স্থাপত্যকর্ম এর আগে আগা খান পুরস্কার পেলেও মেরিনা ও কাশেফ প্রথম বাংলাদেশি, যাঁরা এই পুরস্কার পেলেন৷ ছবিতে জার্মান স্থপতি আনা হেরিঙ্গারকে ২০০৭ সালের আগা খান পুরস্কার নিতে দেখা যাচ্ছে৷ তিনি দিনাজপুরের রুদ্রপুরে একটি স্কুলের নকশা করে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন৷ এটি ‘দীপশিখা মেটি স্কুল’ নামে পরিচিত।

দুজনই বুয়েটের
তাবাসসুম ও চৌধুরী দুজনেই বুয়েট থেকে স্থাপত‌্যবিদ‌্যায় লেখাপড়া শেষ করেছেন ১৯৯৫ সালে৷ পরে তাঁরা একসঙ্গে গড়ে তোলেন আর্কিটেক্ট ফার্ম আরবানা৷ দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের পর ১৯৯৭ সালে বিয়ে করেন এই জুটি৷ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘরের নকশা তাঁরা করেছেন যৌথভাবে৷ ২০০৫ সালে বিচ্ছেদের পর আরবানা থেকেও আলাদা হয়ে যান তাবাসসুম, গড়ে তোলেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস’।

কয়েকদিনের অপেক্ষা…
বিশ্বের ৩৪৮টি স্থাপত্যকর্ম থেকে জুরিদের বাছাই করা ১৯টি স্থাপনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় তাবাসসুম আর চৌধুরীর নাম এসেছিল গত মে মাসে৷ চূড়ান্ত বিচার শেষে সম্প্রতি (৩ অক্টোবর) আবুধাবিতে এবারের ছয় বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়৷ আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, নভেম্বরে আবুধাবির ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট আল জাহিলি ফোর্টে এবারের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। -ডিডাব্লিউ।



মন্তব্য চালু নেই