মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনে ক্ষুব্ধ জাতিসংঘ

রাখাইন রাজ্যে অভিযানের পর থেকে সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে যাওয়ায় মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। খবর মিয়ানমারের বার্তা সংস্থা মিজজিমার।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইংঘি লি মিয়ানমারের সরকার প্রধানের সঙ্গে দেখা করে এ উদ্বেগের কথা জানিয়ে দ্রুত দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের এ বিশেষ দূত রাখাইন রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গত দেড় মাস ধরে চলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেরও কড়া সমালোচনা করেন।

নভেম্বরের প্রথম দিকে জাতিসংঘ ও নয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে রাখাইন রাজ্য কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তা দেখেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আঁতকে উঠেছে বলে জানান এ বিশেষ দূত।

অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার স্বীকার করেছে রাজ্যটিতে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করতে হেলিকপ্টার গানশিপও ব্যবহার করা হয়েছে।

মিয়ানমার অবশ্য দাবি করছে, সন্ত্রসীদের আশ্রয় দেয়ায় রাখাইনের কয়েকটি গ্রামে শুদ্ধি অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

গত মাসে দেশটির সীমান্তরক্ষীদের উপর হামলার পর থেকে রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নৃশংস বর্বরতা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে।

বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে মুসলমান পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করে নারীদের ধরে নিয়ে গণধর্ষণ করছে সেনা সদস্যরা।

প্রাণভয়ে হাজার মুসলিম পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পালাতে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি অনেকের। ধরা পড়লেই নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে তাদের।

তাদের এ নিষ্ঠুরতা থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। সেখানে কোনো মানবাধিকার সংগঠনকে ত্রাণ কাজ চালাতে দেয়া হচ্ছে না।

হাজার হাজার নিরীহ মুসলমান অনাহারে আছেন। খাবার না পেয়ে অনেক শিশু মারা যাচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কোনও সাংবাদিককেও যেতে দেয়া দিচ্ছে না অভিযান চালানো এলাকাগুলোতে।

জাতিসংঘের এ বিশেষ দ্রুত রাখাইনে অভিযান বন্ধ করে মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর অনুমতি এবং বিদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা নিষেধ তুলে নেয়ারও আহ্বান জানান।

এর আগে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও রাখাইন এডভাইজারি কমিশনের প্রধান কফি আনানও রাখাইন রাজ্যে পরিদর্শন শেষে সেনাবাহিনীর চালানো শুদ্ধি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে সরকারকে দ্রুত পরিস্তির উন্নয়ন ঘটাতে তাগিদ দিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই