মুক্তিযুদ্ধে সেই হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ভাঙা অংশ ভেসে উঠল পদ্মায়

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মিত্র বাহিনীর বোমার আঘাতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ভেঙে যাওয়া স্প্যানের অংশ বিশেষ ৪৪ বছর পর পদ্মা নদীতে ভেসে উঠেছে। স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ ব্রিজের ভেঙে যাওয়া অংশটি সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

রেল বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বর্ণপদক পাওয়া স্থানীয় ডুবুরি আশরাফ আলী খান পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ভেঙে যাওয়া হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ওই স্প্যানের অস্তিত্ব টের পান। তাঁর কাছে থেকে বিষয়টি জেনে লোকজন মুক্তিযুদ্ধে ভেঙে যাওয়া ব্রিজের সেই অংশটি দেখতে পাকশীর হার্ডিঞ্জ সেতু ও লালন শাহ জোড়াসেতু এলাকায় পদ্মার পাড়ে ভিড় করে।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজের শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর বোমা নিক্ষেপের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যাতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ব্যবহার করে নদীর এপারে এসে হামলা করতে না পারে সেজন্য ভারতীয় মিত্র বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রিজে বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ব্রিজের ১২ নম্বর স্প্যানটি ভেঙে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ভারত সরকার ব্রিজ সংস্কারে রাষ্ট্রীয়ভাবে সহায়তা করে। তবে ব্রিজের ভেঙে পড়া স্প্যানটির কোনো খোঁজ না পেয়ে ১৯৭৫ সালে নতুন করে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয়। ওই বছরের ৫ আগস্ট হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিছুদিন আগে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ভেঙে যাওয়া ওই অংশ ভেসে উঠেছে।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের সেতু প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাকশী বিভাগীয় ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ভেঙেপড়া সেই স্প্যানের কিছু অংশ ১৯৭২ সালে একবার পদ্মায় ভেসে উঠেছিল, সে সময় পানির গভীরতা বেশি থাকায় কিছু অংশ উদ্ধার করা গেলেও বেশির ভাগ অংশই নদীতে রয়ে যায়। দুই তিনদিন আগে আবারও সেই স্প্যানের বাকি অংশ ভেসে ওঠার খবর শুনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সরেজমিন ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রেলওয়ের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন জানান, বিভাগীয় আদেশ পেলেই পদ্মা নদী থেকে ব্রিজের ভেঙে পড়া ওই অংশ উদ্ধারের কাজ শুরু করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই