মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা, কী করবে জামায়াত?

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছে। ইতোমধ্যেই লাল সালুতে মুড়ে এই পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছানো হয়েছে। মৃত্যু পরোয়ানাটি তাকে পড়েও শোনানো হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধীদের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একসময় গোটা দেশে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সম্প্রতি অস্বাভাবিকভাবে নিশ্চুপ। দীর্ঘ দিন ধরেই রাজপথে তারা নিষ্ক্রিয়, কোনো কিছুতেই যেন তারা নেই। এমনকি ফাঁসির দড়ির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দলের সেক্রেটারি জেনারেলের জন্যও তাদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না।

মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর এমনকি বিবৃতি দিয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি দলটি। কিন্তু এই জামায়াতই যুদ্ধাপরাধের বিচারের শুরুর দিকে দেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। দিনের পর দিন হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ ‘খুন’ থেকে শুরু করে জ্বালাও পোড়াও করে বিচার বন্ধের ‘বেআইনি দাবি’ জানায়।

বিশেষ করে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের সময় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় জামায়াত। এতে শতাধিক মানুষের প্রাণ ঝরে যায়। সেইজামায়াতকে এখন হ্যারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের অবস্থান জানতে ফোনে তো পাওয়া যায়ই না, বিবৃতি দেয়ার মতোও অবস্থা নেই তাদের।

শুরুর দিকে জামায়াতের নেতাদের রায়ের দিন ও রায়ের পরে লাগাতার হরতাল ডাকতো জামায়াত।

জানা গেছে, আইন অনুযায়ী আপিল রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করতে পারবে আসামিপক্ষ। সেই হিসেবে রিভিউ করার জন্য ১৫ দিন সময় পাবে মুজাহিদ। রিভিউ খারিজ হলে শুরু হবে রায় কার্যকরের বাকি আনুষ্ঠানিকতা।

জামায়াতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই নেতার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে কি ভাবছে জামায়াত- জনমনে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এনিয়ে জামায়াত এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি। ফোন করেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে এর আগে ১৮ জুন আপিলে মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল থাকার পর হরতাল ডেকেছিল জামায়াত।

ওই সময় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের এক বিবৃতিতে মুজাহিদসহ আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।

বিবৃতিতে মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলাকে ‘সরকারের ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করা হয়েছিল।

কিন্তু মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ গত ১৬ জুন মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন।

মুজাহিদের আপিলের ১৯১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় লিখেছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা এ রায়ের সঙ্গে একমত হয়েছেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুক্তিযুদ্ধকালে আলবদর বাহিনীর নেতা মুজাহিদকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২।



মন্তব্য চালু নেই