মুদি দোকান থেকে মহাকাশে!

ইচ্ছাশক্তি মানুষকে মহাকাশেও নিয়ে যেতে পারে, তার প্রমাণ ভারতের ছত্তিশগড়ের ২৬ বছরের যুবক বিকাশ অগ্রবাল। মাত্র একবছর আগে যিনি মুদি দোকানে জিনিস বিক্রি করতেন, আজ তিনিই একসঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো ইসরোর বিজ্ঞানীদের দলের সদস্য। ইতিমধ্যে একসঙ্গে এতগুলি উপগ্রহ মহাকাশে সফল উৎক্ষেপণ করে গোটা বিশ্বে নজির তৈরি করেছে ভারত। থবর এবেলার।

ছত্তিশগড়ের কোরবা শহরের বাসিন্দা বিকাশ বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিল। কিন্ত পড়শোনার সঙ্গে সঙ্গেই ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পারিবারিক মুদি দোকানে বাবাকে সাহায্য করতে হত বিকাশকে। মাত্র একবছর আগে পর্যন্ত এই দোকানেই চাল, ডাল, তেল, নুন বিক্রি করতেন বিকাশ। বাবার ইচ্ছা ছিল, ছেলেও তার মতো পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরুক।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই একা একাই পড়াশোনা করতেন বিকাশ। কোন গৃহশিক্ষকের সাহায্য নেননি। এরপর গত বছর ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরোর পরীক্ষা দিয়ে ২ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেন তিনি।

বুধবার ইসরো একসঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে, তাতে এই তরুণ বিজ্ঞানীরও অবদান রয়েছে। বর্তমানে ইসরোর তিরুঅনন্তপুরম সেন্টারে কর্মরত রয়েছেন বিকাশ। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণেই ইসরোর অভিযান নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি বিকাশ। রকেটের উপরের যে অংশে উপগ্রহ বহন করা হয়, সেই অংশটি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন তিনি।

দোকানে বেচাকেনা করার মাঝে যে ফাঁকা সময় পেতেন, তখনই পড়াশোনা করতেন বিকাশ। নিজের বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্নপূরণ করতে গভীর রাত পর্যন্তও পড়তেন তিনি। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৮৯ শতাংশ নম্বর পান বিকাশ। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভর্তি পরীক্ষার গেট উত্তীর্ণ হন তিনি। গোটা দেশের মধ্যে বিকাশের র‌্যাঙ্ক ছিল ১৬০০। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে পড়াশোনার অনুমতি পাননি বিকাশ।

বাড়ির লোককে কিছু না জানিয়েই ২০১৪ সালে ইসরোর পরীক্ষায় বসেন বিকাশ। কিন্তু সাফল্য পাননি। হাল না ছেড়ে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ফের ইসরোর পরীক্ষায় বসেন তিনি। এবারে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বিকাশকে। দু’লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে থেকে ৫ নম্বর র‌্যাঙ্ক পান বিকাশ। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ৩০০ জনের ইন্টারভিউ নেয় ইসরো। তার মধ্যে নির্বাচিত হন বিকাশ। শুরু হয় তাঁর স্বপ্নের সফর।



মন্তব্য চালু নেই