মুহাম্মদ (সা.) শ্রেষ্ঠ নবী হওয়ার মূল কারণ

পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, যার ওপর নবীগণের আগমনের ধারাবাহিকতা সমাপ্ত হয়েছে, তিনি হলেন হজরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি তার উম্মতের সামনে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে যে সব বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে দিকনির্দেশনা দান করেছেন, তন্মধ্যে অন্যতম বিষয় হলো- হে আমার উম্মত! তোমরা খুব ভালোভাবে লক্ষ্য কর, আমি শ্রেষ্ঠ নবী, শ্রেষ্ঠ কিতাবের অধিকারী, শেষ নবী, এসব বৈশিষ্ট্যের মূল হোতা- জ্ঞান। এখানে জ্ঞান বলতে সেই জ্ঞানকে বোঝানো হয়েছে, যে জ্ঞান বস্তুজগৎ ও আধ্যান্তিক জগতে সার্বিক সমস্যার সমাধান দিতে পারে। অর্থাৎ কোরআন কারিমের জ্ঞান বা ওহির জ্ঞান।

এক্ষেত্রে মানুষের মাঝে ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। একশ্রেণির মানুষ মনে করে থাকেন, ইসলামে বস্তুজ্ঞানের স্থান নেই। আরেক শ্রেণির মানুষ মনে করেন থাকেন, ইসলাম বস্তুর প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে। প্রথম ধারণাটি হলো খ্রিস্টানদের, বৈরাগ্যবাদ তাদের থেকেই সৃষ্টি। আর দ্বিতীয়টি হলো ইহুদি ও সমাজবাদীদের ধারণা। ইসলাম এ দুয়ের কোনোটিকেই স্থান দেয় না। ইসলাম বলে মানুষের শরীরটি বস্তুর তৈরি, তার সমস্যা আছে। সেই সমস্যার সমাধান আবশ্যক। আÍা দেখা যায় না, অদৃশ্য। তারও সমস্যা আছে, তারও সমাধান প্রয়োজন। দুনিয়ার জীবন দৃশ্যময়। এই দুনিয়ার সমস্যাদির সমাধান আছে, আর আখেরাতের জীবন অদৃশ্য, সেখানেও সমস্যা আছে, তারও সমাধান আছে। ইসলাম উভয়টির ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেয়। মূলত ইসলাম এমন একটি জ্ঞানের কথা বলে, যে জ্ঞান বস্তু ও আধ্যান্তিক উভয়টির মাঝে সমন্বয় সাধন করে।

হজরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, সবার ওপর আমার মর্যাদা শ্রেষ্ঠ হওয়ার দুটি কারণ
১. জ্ঞান, আমি মুয়াল্লিম; আমাকে ওস্তাদ বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। দুনিয়াবি কোনো ইলমের ওস্তাদ নয়, যে ইলম মানুষকে বস্তুমুখী করে বা বৈরাগ্যবাদ শিক্ষা দেয়। বরং আমাকে সেই ইলমের ওস্তাদ বানিয়ে পাঠানো হয়েছে, যে ইলম মানুষের দুনিয়া-আখেরাত, শারীরিক-আধ্যান্তিক, দৃশ্য-অদৃশ্য সব সমস্যার সমাধান দেয়, সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়। মোট কথা যে ইলমকে আমরা সহজ ভাষায় কোরআন হাদিস ও অহির ইলম বুঝে থাকি, নবীকে সেই ইলমের ওস্তাদ বানিয়ে পাঠানো হয়েছে।
২. উন্নত চরিত্র, উক্ত ইলম দ্বারা আমি সমাজের মানুষকে চরিত্রবান করে গড়ে তুলি। এটি এমন ইলম, যে ব্যক্তি এই ইলম গ্রহণ করেছে, সে চারিত্রিক পবিত্রতার অধিকারী হয়েছে। যে ব্যক্তি এই ইলম গ্রহণ না করবে, সে চরিত্রবান হতে চেয়ে যোগী ও সাধু হয়ে যাবে। তার মাধ্যমে সমাজে সমস্যার সৃষ্টি হবে। সমাজে শৃঙ্খলা আসবে না। শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের আখলাক পরিবর্তন, আখলাকের সৌন্দর্য সাধন এবং আখলাককে নিপুণ করে তোলার জন্য আমি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছি। এ কারণেই আমাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই