মৃতদেহ নিয়ে অদ্ভুত কয়েকটি রীতি

মূত্যুর পরে মানুষের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রচলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। আমাদের অধিকাংশ মানুষের কাছেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মাধ্যম হিসেবে আগুনে দাহ করা বা কবরে সমাহিত করা-এ দুটি পদ্ধতিই সর্বাধিক পরিচিত।

কিন্তু একটু খোঁজখবর নিলে আপনি সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মূত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কিছু অদ্ভুত, সৃজনশীল এবং উদ্ভট প্রচলন সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবং এসব জানার পর আপনি বিস্মিত না হয়ে পারবেন না।

শকুন দিয়ে লাশের মাংস খাওয়ানো থেকে শুরু করে মৃতদেহ মণ্ডে প্রহার করা পর্যন্ত- মৃতদের সৎকার করার উদ্ভট সব প্রথা রয়েছে। এ ধরনের ১৪টি অদ্ভূত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রথা নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ প্রথম পর্বে ৭টি প্রথা তুলে ধরা হলো।

১. মৃতকে রঙিন পুঁতিতে রুপান্তরিত করা

দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেকে মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষ কম্প্রেস করে বিভিন্ন রঙের রত্ন সাদৃশ্য পুঁতিতে পরিণত করেন, যা পরে বাড়ীতে প্রদর্শন করা হয়।

২. মৃত ব্যক্তির

দেহাবশেষ খেয়ে ফেলা আগের দিনে পাপুয়া নিউ গিনি এর মেলানসিয়ান এবং ব্রাজিল এর ওয়ারী গোত্রের মানুষেরা ভয় এবং মৃত্যুর ধারণা ঘিরে থাকা রহস্যকে বিতাড়িত করার জন্য মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষ খেয়ে ফেলতেন। ইয়ানোমামী গোত্রের লোকদেরও এই অভ্যাস ছিল।

৩. মৃতের হাড় ঘিরে নৃত্য করা

মাদাগাস্কারের মালাগাসি গোত্রের মানুষেরা প্রতি সাত বছরে একবার তাদের মৃত স্বজনদের হাড় কবর থেকে উত্তোলন করে এবং তা কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিয়ে নাচ করে। এটা সম্ভবত বেশ বাজে গন্ধ ছড়ায়। তাই তারা ওয়াইন এর সাথে এটি স্প্রে করে এবং তাদের পরিবারেরকে গিয়ে সে গল্প শোনায়।

৪. উদ্ভট কফিনে সমাহিত করা

ঘানার জনগণ মৃত ব্যক্তির জীবনকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন ধরনের কফিনে তাকে সমাহিত করে। যেমন পাইলটকে বিমান আকারের কফিনে, জেলেকে মাছের আকৃতির কফিনে, গাড়ি ব্যবসায়ীকে মার্সেডিজ গাড়ি আকৃতির কফিনে সমাহিত করে।

৫. মৃতদেহ পাখিদের অর্পণ করা

তিব্বতে বিশেষ করে বৌদ্ধরা মাঝে মাঝে মৃত ব্যক্তির শরীর টুকরো টুকরো করে কেটে পাখিকে তৃপ্তি করার জন্য একটি পাহাড়ের ওপর রেখে আসে। বৌদ্ধরা মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষকে খালি পাত্র হিসেবে বিবেচনা করে এই আকাশ সমাধিকে দানশীলতা এবং সমবেদনা হিসেবে দেখে।

৬. প্রিয়জনের মৃত্যুতে নিজের আঙুল কেটে ফেলা

পাপুয়া নিউ গিনির দানি সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে প্রিয়জনের মৃত্যু বোঝাতে মৃতের সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনো জীবিত নারী ও শিশুকে নিজের আঙ্গুল কাটতে হয়। এটা তারা করত অশুভ আত্মাকে দূরীভূত করার জন্য। তবে বর্তমানে এটি নিষিদ্ধ।

৭. মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় জাজ সংগীত

বড় বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে সংগীত সংস্কৃতি ম্যাক্সিকোর নিউ অর্লিন্স এর মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে মিশে আছে। এমনকি এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, তারা কেউ মারা গেলেও সংগীত বাজায়। মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যাত্রার শুরুতেই থাকে বড় বাদ্যযন্ত্রের ব্যান্ড, যারা প্রথমে বিষণ্ণ সুর বাজায় এবং যা ক্রমান্বয়ে আনন্দময় জ্যাজ ও ব্লুজ সংগীতে পরিণত হয়, সঙ্গে শুরু হয় নাচ।



মন্তব্য চালু নেই