মানবতাবিরোধী অপরাধ

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আজহারের আপিল

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে সুপ্রীম কোর্টে আপিল করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম।

সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় বুধবার দুপুরে আজহারুল ইসলামের আইনজীবী এ্যাডভোকেট শিশির মনির এ আপিল দায়ের করেন। ৯০ পৃষ্ঠার আপিলের রায়ে সর্বমোট দুই হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার নথিপত্রের ১১৩টি গ্রাউন্ডে আজহারের খালাস চাওয়া হয়েছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।

আজহারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ৫ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর জেল ও ৬ নম্বর অভিযোগে ৫ বছরের জেল দেওয়া হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে রংপুর অঞ্চলে ১২২৫ ব্যক্তিকে গণহত্যা, চারজনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং শত শত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ- এই ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন শেষে আজহারের মামলার রায় অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।

আসামীপক্ষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন আজহারের আইনজীবী। এর আগে ১৮ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত আজহারের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আজহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সর্বমোট ১৯ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দী পেশ করেন।

একই বছরের ১২ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

এ সব অভিযোগের তদন্তকালে ৬০ জনেরও বেশী ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ মামলাটি তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা (আইও) এস এম ইদ্রিস আলী।

প্রসিকিউশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের স্বার্থে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আজহারকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আজহারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।

৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে। মোট চারটি ভলিউমে ৩০০ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করা হয়।

এর আগে ২০১৩ সালের ৪ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের ৯ ধরনের অভিযোগে তদন্ত শেষ করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশন বরাবর তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের আদেশে রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রসিকিউশন তাকে গ্রেফতারের আবেদন করে।



মন্তব্য চালু নেই