মৃত্যুর অভিনয়ে ব্যর্থ হয়েছিল যারা

মানুষ একবার জন্মায়। মৃত্যুর তার কাছে আসে একবারের জন্যেই। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা মৃত্যুর আগেই মারা গিয়েছেন। তাও আবার একদম নিজেদের ইচ্ছাতেই। আরো সোজা করে বলতে গেলে বলতে হয়, বিভিন্ন কারণে নিজেরাই নিজেদের মৃত্যুর মিথ্যে নাটক সাজিয়েছিলেন এরা। কেউ কেউ তো ঠিকঠাকভাবে পার পেয়ে একদম নিজের মতন করে আরেকটা জীবন শুরু করতেও সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে পথটা এত সোজা হয়নি। ধরা পড়ে গিয়েছেন বেশিরভাগই। আর এমন বিশ্বজুড়ে মিথ্যে মৃত্যুর অভিনয় করতে গিয়ে হাস্যকরভাবে ধরা পড়ে যাওয়া কিছু মানুষকেই তুলে ধরা হল আজকের এই আয়োজনে।

১. বানান ভুলের বিড়ম্বনা

২০১০ সালের কথা। ৪২ বছর বয়সী মাইকেল রোজেন তখন বেশ ভালোভাবেই পুলিশী ঝামেলায় জড়িয়ে গিয়েছেন। একদিকে গাড়ির ভুয়া লাইসেন্স আর অন্যদিকে বান্ধবীর করা চুরির মামলা- অবস্থা বেশ নাস্তানাবুদ তখন তার। এমন একদিন হঠাত্ কি মনে হল সব ঝামেলা থেকে বাঁচতে গিয়ে রোজেন নিজেকে মৃত বলে দাবী করেন এবং নিজের বড়ভাইয়ের পরিচয়ে পুলিশের কাছে মৃত্যুর সার্টিফিকেট জমা দেন। পুলিশ সেটা গ্রহন করে রোজেনের ওপর থেকে তাদের সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাহার করে। সবটাই ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ সমস্যা দেখা দেয় রোজেনের মৃত্যুর সার্টিফিকেটে থাকা বানান ভুলের কারণে। পুলিশের চোখে পড়ে সেটা আর সেই সূত্রেই বুঝতে পারে তারা যে সার্টিফিকেটটি ভূয়া। ফলাফল? ২০১৪ অব্দি জেল হয়ে যায় রোজেনের।

২. বেল তলায় বারবার

২০০৫ সালে একবার এক সড়ক দূর্ঘটনার কবলে পড়ে লোয়ার ডেস মনিসে বসবাসরত ডু। পুলিশ তাকে তলব করলে একটা চিঠি পায় তারা। ডুয়ের মায়ের চিঠি। সাথে ডুয়ের মৃত্যুর সার্টিফিকেট। ব্যাপারটা তখনই শেষ হয়ে যায়। সত্যিই তো! মৃত ব্যাক্তির আবার সাজা কিসের? কিন্তু মরে গেলেও ডুয়ের গাড়ি চালানো কিন্তু বন্ধ হয়নি। আর তাই কিছুদিনের ভেতরে আবারও সড়ক দূর্ঘটনার মুখোমুখি হয় সে। ফলাফল? আবার পুলিশি তলব। আর সেখানেই পুলিশ জানতে পারে যে, সেবারের সেই চিঠিটা ডুয়ের মা লেখেননি। বরং ঝামেলা থেকে বাঁচতে নিজেকেই মেরে ফেলেছিল ডু।

৩. অন্যদের জন্যে মরল যে

আসলে কথাটা হবে অন্যদের জন্য নয়, বরং অন্যদের কষ্ট কমাবার জন্য। ২০০৭ সালে তখন নিয়মিত চার্চে যেতে হত অ্যালিসন আটিরা। প্রায়ই চার্চে যেতে ইচ্ছে হত না এই ২৭ বছর বয়সী মেয়েটির। কিন্তু সরসরি সবাইকে বললে যদি কষ্ট পায় সবাই? এই ভেবে নিজেই নিজের মৃত্যুর ভান করে মাটিরা। চার্চকে বলে তার ক্যান্সার হয়েছে এবং এর ঠিক এক বছর পর নিজেই চার্চকে ফোন করে নিজের বোন পরিচয় দিয়ে জানায় যে, মাটিরা মারা গিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য সত্যিটা বেরিয়ে আসে। তবে পুলিশ কিন্তু এই ধোঁকার জন্যে ধরতে পারেনি মাটিরাকে।

৪. তিনবার মরেছে যে ব্যাক্তি

শুরুটা হয় ১৯৯১ সাল থেকে। সেবার গাড়ির বেআইনী কিছু ঝামেলায় পুলিশ তলব করে পিটার জেন্ট্রিকে। ১৯৯২ সালেই অবশ্য নিজের ভূয়া মৃত্যুর সার্টিফিকেট পাঠিয়ে পুলিশের দ্বার সমস্ত অভিযোগ সরিয়ে নেন পিটার। যদিও সেই সার্টিফিকেট ছিল ভুলে ভরা। এরপর? এরপর একে একে ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালেও ফের পুলিশি ঝামেলায় জড়ান তিনি এবং প্রতিবারই নিজের ভূয়া মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেখিয়ে পার পেয়ে যান। তবে শেষমেশ ১৯৯৫ সালে চারবারের বার ধরা পড়তেই হয় তাকে পুলিশের হাতে। আর এবার পুলিশ জানতো পিটারের কর্যবিধির কথা। সুতরাং? সোজা জেল!



মন্তব্য চালু নেই