মৃত্যুর দুয়ারে মারিওন বারতোলি?

বয়স মাত্র ৩১ বছর। তার চেয়েও বয়সে ৩ বছরের বড় হয়ে টেনিস কোর্টে দাপটের সঙ্গে বিচরণ করছেন সেরেনা উইলয়ামস। এই তো বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) উইম্বলডন টেনিসে প্রমীলা এককের ফাইনালেও উঠে গেলে মার্কিন কৃষ্ণ সম্রাজ্ঞী। অথচ ২০১৩ সালের এই ইভেন্টের শিরোপা জয়ী মারিওন বারতোলি কিনা এবারের আসরে খেলতেই পারলেন না। খেলবেন কিভাবে? অজ্ঞাত এক ভাইরাসে আক্রান্ত ফ্রান্সের এই প্রমীলা টেনিস তারকা। তা এমন ভাইরাস যা চিকিৎসকরাও শনাক্ত করে উঠতে পারছেন না। ভাইরাসের আক্রমণে দিনকে দিন শুকিয়ে যেতে শুরু করেছেন বারতোলি। মৃত্যু ভয় ভর করেছে তার মনে। ভীত-সন্ত্রস্ত্র এই ফরাসি তারকা বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ভীষণ ভয় করছে। য়ে কোনো দিন হয়তো আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে।’

পারফরম্যান্সের কারণে তো বটেই; মারিওন বারতোলি সকলের বাড়তি আকর্ষণ কেড়ে নিতেন তার হৃষ্টপুষ্ট শরীরের কারণে। টেনিস খেলোয়াড় হলেও তার শরীরটা একটু বেশিই স্থূল ছিল। অথচ বারতোলির সেই শরীরটাই কিনা এখন লিকেলিকে হতে চলেছে। তার বর্তমান চেহারা দেখলে রীতিমতো ভিমরি খেতে হয়। নিজের অজান্তেই মনে প্রশ্ন জাগে, ‘এই বার্তোলি কি সেই বার্তোলি?’

ব্যাপারটা প্রথম ধরা পড়ে চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন টেনিসের আসর ঘিরে। আয়োজকদের আমন্ত্রণে অস্ট্রেলিয়ায় উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। সেখানে ক্যামেরায় ধরা পড়ে তার বদলে যাওয়া শরীরটা। সেই সময় সবাই ধরে নিয়েছিল শরীরের মেদ কমাতে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করছেন তিনি। এ নিয়ে ফেসবুক-টুইটারে অনেকেই তাকে নিয়ে ঠাট্টা-মসকরা করেছে, অপমানকর পোস্টও দিয়েছে। তবে লন্ডনে চলমান উইম্বলডন টেনিসে এসে আসল সত্যটা সবাইকে জানিয়ে দিলেন বার্তোলি।

ফ্রান্সের এই সফল টেনিস তারকা জানিয়েছেন, অজ্ঞাত ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কিছুই খেতে পারেন না তিনি। একমাত্র বিশেষ কিছু ভেজিটেবল সালাদ খেয়ে জীবন ধারণ করছেন। অন্য খাবারগুলো শরীর মেনে নিতে চায় না। চিকিৎসকরাও স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তিনি যে কোন রোগে আক্রান্ত তা নির্ণয় করতে অপরাগ তারা।

২০১৩ সালে উইম্বলডনের ফাইনালে শিরোপা জেতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্য়ন্ত প্রায় ৩০ কেজি ওজন হারিয়েছেন তিনি। টেনিস কোর্টের এক সময়ের দাপুটে খেলোয়াড়টি এখন তাই বিভীষিকার মধ্য সময় পার করছেন। নিজেকে মৃত্যুর দুয়ারে দেখতে পাচ্ছেন তিনি। নিজের বর্তমান শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার জীবন এখন ভয়ানক অন্ধকারে ডুবে গেছে। প্রার্থনা করি যেন আর কারো ক্ষেত্রে এমনটা না হয়।’

কিভাবে এমন অজ্ঞাতে ভাইরাস ঢুকে পড়ল তার শরীরে? এর সঠিক কোনো উত্তর জানা নেই এই ফরাসি টেনিস খেলোয়াড়ের। শুধু জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউ ইয়র্ক ও ভারতে একটা সময় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। হয়তোবা তখনই কোনো ভাবে এই ভাইরাস তার শরীরে দানা বেঁধেছিল।

২০১৩ সালেই আন্তর্জাতিক টেনিসকে বিদায় জানিয়েছিলেন মারিওন বারতোলি। তবে ২০১৫ সালে এক টুইট বার্তায় ফের ফিরে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। এবারের উইম্বলডনে আয়োজকরা তাকে এক প্রীতি ম্যাচে খেলারও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে টেনিস কোর্টে নামতে বারণ করেছেন। যে কারণে ম্যাচটি আর খেলা হয়নি। শরীরে এখন সেই ক্ষমতাও নেই তার। একটুতেই হাঁপিয়ে উঠেন। এমন কি কী-বোর্ডে ৫ মিনিট টাইপ করলেও হৃৎপণ্ডির গতি বেড়ে যায়। মারিওন বারতোলি বুঝি আর কোনো দিনই টেনিস কোর্টে ফিরতে পারবেন না; জেগেছে তেমনই শঙ্কা।



মন্তব্য চালু নেই