মেনোপোজের অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ

প্রতিটি নারীর জীবনের একটি পর্যায়ে মেনোপোজের সম্মুখীন হতে হয়। যখন কোন নারীর পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায় তখন তাকে মেনোপোজ বলে। নারীর মেনোপোজ চারটি স্তরে হয়ে থাকে যেমন- প্রিমেনোপোজ, পেরিমেনোপোজ, মেনোপোজ এবং পোস্টমেনোপোজ। মেনোপোজের সাধারণ লক্ষণগুলো যেমন – হট ফ্ল্যাশ, ভেজাইনাল ড্রাইনেস, মেজাজের উঠানাম এবং লো সেক্স ড্রাইভ ইত্যাদির বিষয়ে আমরা সবাই জানি। কিন্তু মেনোপোজের আরো কিছু অস্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ আছে যা আমরা জানিনা। মেনোপোজের এমন কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণের কথাই জেনে নিব আজ এই ফিচারে।

১। ত্বক ও চুলের পরিবর্তন

মেনোপোজের সময় বেশিরভাগ মানুষই চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার এবং মাথার তালু শুষ্ক হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে থাকেন। শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে এমন। ত্বকের রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে ত্বকে পানির পরিমাণ কমে যায়। এন্ড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা পরিবর্তনের কারণে নারীদেহে পুরুষের বৈশিষ্ট্য যেমন- ঠোঁটের উপরে, চিবুকে ও গালে লোমের বৃদ্ধি হতে দেখা যায়।

২। জয়েন্ট ও পেশীতে ব্যথা

জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, শক্ত হওয়া এবং ব্যথা করার মত লক্ষণগুলো দেখা যায় মেনোপোজ হওয়া নারীদের মধ্যে। সাধারণত এই ধরণের ব্যথা সকালে প্রকট হয়। একে মেনোপোজ আরথ্রাইটিস বলে। এটি পিঠ, কোমর ও হাঁটুতে প্রভাব ফেলে। ইস্ট্রোজেন হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে, তবে এর সঠিক প্রক্রিয়াটি এখন ও জানা যায়নি।

৩। হৃদস্পন্দন

বুকে ঘোড়দৌড়ের মত অনুভূতি হওয়া বা বুক ধড়ফড় করা (প্রতি মিনিটে অতিরিক্ত ২০০ বার হৃদস্পন্দন হতে পারে) পেরিমেনোপোজ ও মেনোপোজের লক্ষণ। হরমোনের তীব্র ওঠানামার কারণে হয় এমন। অধিকাংশ নারীদের হট ফ্ল্যাশের পর বুক ধড়ফড় করার সমস্যা দেখা দেয়।

৪। মাথাব্যথা

কিছু নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপোজের সময় মাথাব্যথার সমস্যা খারাপ হতে দেখা যায়। হঠাৎ করেই ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে পেরিমেনোপোজ ও মেনোপোজের সময় মাথাব্যথা বৃদ্ধি পায়।

৫। অনিদ্রা

মেনোপোজের সময় ডিম্বাশয়ে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের উৎপাদন কমতে থাকে বলে ইনসোমনিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও হট ফ্ল্যাশের কারণে অধিক ঘাম হওয়া এবং দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।

৬। ওজন বৃদ্ধি পায়

হ্যাঁ মেনোপোজের কারণেও মেদ বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে কোমর ও পেটের মেদ বৃদ্ধি পায়। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়া, বয়স সংক্রান্ত পেশীর টিস্যুর ক্ষয় হওয়া এবং খাদ্য ও ব্যায়ামের মত লাইফস্টাইলের বিষয়গুলোর কারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সমস্যা হতে পারে।

৭। প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হওয়া

মেনোপোজের সময়ে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা আস্তে আস্তে কমতে থাকে বলে নারীর শ্রোণি অঞ্চলের পেশী দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে মূত্র থলির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হয়ে যায়। তাই প্রস্রাবের বেগ আসলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখাও মুশকিল হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই